অমরেন্দ্র সিংহ। ফাইল চিত্র।
অপমান সহ্য করে তিনি আর দলে থাকতে চান না বলে সনিয়া গাঁধীকে জানিয়ে দিলেন ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। শনিবার কংগ্রেস সভানেত্রীকে পাঠানো বার্তায় পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
অমরেন্দ্রর ক্ষোভের উৎস, এআইসিসি-র তরফে শনিবার বিকেলে ডাকা পঞ্জাবের কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠক। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা অমরেন্দ্রর সঙ্গে সে বিষয়ে কোনও আলোচনাই করা হয়নি বলে তাঁর অনুগামীদের অভিযোগ। অমরেন্দ্র শিবিরের নেতারা জানিয়েছেন, চণ্ডীগড়ের প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে আয়োজিত ওই বৈঠকে তাঁরা যোগ দিচ্ছেন না। বরং অমরেন্দ্রর নেতৃত্বে রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের জন্য আলাদা ভাবে বৈঠক করতে চলেছেন। চলতি ঘটনাপ্রবাহ পঞ্জাব কংগ্রেসের ভাঙনের ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্ব পরিবর্তন থেকে ঐতিহাসিক জালিয়ানওয়ালা বাগের ভোলবদল, সম্প্রতি নানা বিষয়েই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে অমরেন্দ্রর মতভেদ প্রকাশ্যে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী দল ছাড়তে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, আশির দশকে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে সেনা অভিযানের প্রতিবাদে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন পাটিয়ালার রাজ পরিবারের সন্তান তথা প্রাক্তন সেনা অফিসার অমরেন্দ্র। কয়েক বছর পরে ফের দলে ফেরেন তিনি।
কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অমরেন্দ্র ইতিমধ্যেই সনিয়াকে জানিয়ে দিয়েছেন, এত অপমান সহ্য করে তিনি দলে থাকতে পারবেন না। জুলাই মাসে অমরেন্দ্রের আপত্তি সত্ত্বেও নভজোৎ সিংহ সিধুকে পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন সনিয়া। এর পর ধারাবাহিক ভাবে দু’গোষ্ঠীর বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। সিধু অনুগামী একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়ক প্রকাশ্যে অমরেন্দ্রর অপসারণের দাবিতে সরব হয়েছেন।
শনিবার পঞ্জাবের কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী বদল নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। শনিবার বিকেল ৫টায় চণ্ডীগড়ে পঞ্জাবের কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী বদল নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। পঞ্জাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক হরিশ রাওয়ত টুইটারে লিখেছেন, ‘পঞ্জাবের কংগ্রেস বিধায়কদের বড় অংশের আবেদনের প্রেক্ষিতে বৈঠক ডাকা হয়েছে।’
অন্যদিকে, রাহুল গাঁধী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সৌন্দর্যায়নের নামে ঐতিহাসিক স্মারক জালিয়ানওয়ালা বাগের রূপ বদল নিয়ে প্রকাশ্যে কেন্দ্রের সমালোচনা করলেও অমরেন্দ্র জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের ওই উদ্যোগ তাঁর ভাল লেগেছে। আগামী বছরের গোড়ায় উত্তরপ্রদেশে, উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে পঞ্জাবেরও বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। অমরেন্দ্র দল ছাড়লে ওই রাজ্য কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস।