মাসুদ আজহার— ফাইল চিত্র।
পুলওয়ামা কাণ্ড নিয়ে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র পেশ করা চার্জশিটে নাম রয়েছে জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের। মঙ্গলবার জম্মুর এক বিশেষ আদালতে এই চার্জশিট পেশ করে এনআইএ। তাতে মাসুদকে এই জঙ্গি হানার মূল ষড়যন্ত্রকারী বলা হয়েছে। এ ছাড়াও মাসুদের দুই ভাই রউফ আসগর, আম্মার আলভি এবং উমর ফারুক-সহ মোট ১৯ জনের নাম রয়েছে চার্জশিটে।
গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে হামলা হয়। প্রায় ২০০ কেজি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে হামলা চালায় আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমেদ দার। নিহত হন ৪০ জওয়ান।
এ দিন পেশ করা ১৩,৫০০ পাতার এই চার্জশিটে কী ভাবে জঙ্গি হানার পরিকল্পনা করা হয় এবং তা কার্যকর করা হয়, তার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। বলা হয়েছে, পাকিস্তান থেকে ২০ কেজি আরডিএক্স সাম্বা হয়ে জম্মুতে এনেছিল উমর ফারুক। মাসুদ আজহারের দাদা ইব্রাহিম আতারের ছেলে ফারুক ১৯৯৯ সালে কন্দহর বিমান ছিনতাইয়ের মূল অভিযুক্ত। কাশ্মীরে বাহিনীর সঙ্গে গুলিযুদ্ধে নিহত হয় ফারুক।
আরও পড়ুন: নীরব মোদীর স্ত্রী, ভাই-বোনের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস ইন্টারপোলের
আরও পড়ুন: মোদী চা-ওয়ালা! তথ্য নেই, খারিজ আর্জি
গোটা তদন্তের নেতৃত্ব দিয়েছেন এনআইএ-র যুগ্ম ডিরেক্টর অনিল শুক্ল। তিনি জানিয়েছেন, হামলায় ব্যবহৃত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক, ব্যাটারি, ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম অনলাইনে কিনেছিল জঙ্গিরা।
চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, উমর ফারুকের ফোন থেকে পাওয়া জঙ্গিদের হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা চালাচালি, কল রেকর্ডিং, বিস্ফোরকের ছবি, কী ভাবে তা আনা হয়েছিল— সবই জানা গিয়েছে। পুলওয়ামায় ব্যবহৃত বোমাটি বানাচ্ছে তিন জঙ্গি, মিলেছে এমন ছবিও। হামলার পরে তার প্রশংসা করে মাসুদের অডিয়ো এবং ভিডিয়ো বার্তারও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে।
বিভিন্ন গুলিযুদ্ধে নিহত সাত জঙ্গি এবং পলাতক চার জঙ্গির নামও চার্জশিটে রয়েছে। পলাতক দুই জঙ্গি জম্মু-কাশ্মীরেই লুকিয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে এক জন পাক নাগরিক। অন্য জন স্থানীয় বাসিন্দা। এই ঘটনায় ধৃতদের নামও রয়েছে চার্জশিটে।
চার্জশিটের তথ্য অনুযায়ী পুলওয়ামা হামলার পরে জইশ জঙ্গিরা আরও হামলার ছক কষেছিল। তার জন্য তারা গাড়ি এবং আত্মঘাতী জঙ্গিও প্রস্তুত করে ফেলেছিল। কিন্তু পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে ভারতীয় বায়ুসেনা বালাকোটে হামলা চালানোয় তা সম্ভব হয়নি।