India-China Conflict

চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ডোভালের দীর্ঘ ভিডিয়ো কলেই কাটল জট

চিনের বিদেশ দফতরের সোমবারের বিবৃতি বলছে, ‘‘উত্তেজনা প্রশমন এবং ডিসএনগেজমেন্টের লক্ষ্যে অগ্রবর্তী বাহিনী কার্যকরী পদক্ষেপ শুরু করেছে।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ১৮:০৬
Share:

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের দৌত্যে কাটল গালওয়ান জট। ছবি: পিটিআই

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে রবিবার চিনা বিদেশমন্ত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ইর ভিডিয়ো-কল চলেছিল প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে। আর তারই ‘পরিণতি’ গালওয়ান উপত্যকা এবং গোগরার হট স্প্রিং এলাকায় উত্তেজনা প্রশমনে সেনা পিছনোর প্রক্রিয়ায় সাফল্য এসেছে। সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বৈঠকে দু’টি সিদ্ধান্ত হয়েছে। দু’টি দেশের নেতৃত্বের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সমাধানের পথ খোঁজা এবং মতপার্থক্যকে বিতর্কে পরিণত হতে না দেওয়া।’’

Advertisement

বিদেশমন্ত্রকের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দুই বিশেষ প্রতিনিধি (ডোভাল এবং ওয়াং) বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে গভীর এবং খোলামেলা ভাবে পশ্চিম সেক্টরের (লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এই সেক্টরের অন্তর্গত) অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।’’ রবিবারের বৈঠকের পরে এলএসি’তে উত্তেজনা প্রশমনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতির কথা বলেছে বেজিংও। চিনের বিদেশ দফতরের সোমবারের বিবৃতি বলছে, ‘‘উত্তেজনা প্রশমন এবং ডিসএনগেজমেন্টের লক্ষ্যে অগ্রবর্তী বাহিনী কার্যকরী পদক্ষেপ শুরু করেছে।’’

গালওয়ান উপত্যকায় ১৫ জুনের সংঘর্ষস্থল থেকে এক কিলোমিটার সেনা পিছনোর বিষয়ে ডোভালের প্রস্তাব চিনা বিদেশমন্ত্রী মেনে নেন বলে এদিন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। সেই দিশানির্দেশ মেনেই শুরু হয়েছে ‘চোখে-চোখ’ অবস্থানে থাকা দুই সেনার ‘ডিসএনগেজমেন্ট’ প্রক্রিয়া। পাশাপাশি, অজিত ডোভাল-ওয়াং ই বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-র প্রতি সম্মান প্রদর্শন (লঙ্ঘন না করা), শান্তি ও সুস্থিতি বজার রাখা এবং একতরফা পদক্ষেপ না করার বিষয়েও সহমত হয়েছেন দু’জন।

Advertisement

আরও পড়ুন: গালওয়ান থেকে সেনা সরাচ্ছে চিন, তৈরি হল বাফার জোন

মে মাসে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলএসি পেরিয়ে চিনা ফৌজ ঢুকে পড়েছিল। একাধিক বার ডিভিশন কমান্ডার স্তরের বৈঠকেও জট কাটেনি। ৬ জুন কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে উত্তেজনা কমাতে সেনা পিছনোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকরের সময়েই গালওয়ানের পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-য় প্রাণঘাতী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। এর পরে ২২ এবং ৩০ জুন দু’দফায় চুসুল সীমান্ত লাগোয়া চিন নিয়ন্ত্রিত মলডোতে ম্যারাথন বৈঠক করেন লেহ্‌তে মোতায়েন ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার হরেন্দ্র সিং এবং পিপলস লিবারেশন আর্মির দক্ষিণ শিনজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডার লিউ লিন। আলোচনা হয়েছিল বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর এবং ওয়াংয়ের মধ্যেও। কিন্তু তার পরেও বিভিন্ন বিদেশি উপগ্রহ চিত্রে গালওয়ানে চিনা ফৌজের শিবির স্থাপন এবং যানবাহন ও সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করার ‘প্রমাণ’ মিলেছিল।

২০১৭ সালে ডোকলাম ‘স্ট্যান্ড অফ’-এর সময় ডোভালের বিরুদ্ধে অযথা ‘পেশির আস্ফালন’ এবং পরিস্থিতি জটিল করে তোলার অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় তৎকালীন বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্করের তৎপরতার কারণে সমাধান সূত্রের সন্ধান মিলেছিল বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়। কিন্তু এবার কোনও আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যায়নি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে। শেষ পর্যন্ত ডোভালের ভূমিকাই গালওয়ান-গোগরায় সেনা পিছনো এবং উত্তেজনা প্রশমনের পথ প্রশস্ত করেছে বলে এদিন ‘স্বীকৃতি দিল’ বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের মন্ত্রক।

আরও পড়ুন: এ কেমন প্রতিবেশী! শুধু ভারত নয়, রাশিয়া থেকে কম্বোডিয়া, চিনের বিবাদ অনেকের সঙ্গে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement