প্রতীকী ছবি।
করোনার পরিস্থিতিতে নির্বাচনী জনসভা আদৌ করা উচিত কি না, তা নিয়ে আজ দীর্ঘ আলোচনা করলেন নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা। সূত্রের মতে, করোনা আবহে জনসভা করায় সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে বলেই মত দেন স্বাস্থ্য কর্তাদের বড় অংশ। অন্য দিকে ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আজ স্বরাষ্ট্র কর্তাদের সঙ্গেও একপ্রস্ত বৈঠক করেন কমিশন কর্তারা। তার পরেই রাতে উত্তরপ্রদেশে দফায় দফায় ২২৫ কম্পানি আধাসেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পাঁচ রাজ্যে ভোট করানো নিয়ে গোড়া থেকেই মতপার্থক্য রয়েছে স্বাস্থ্য কর্তাদের মধ্যে। একাংশের মতে, তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ভোটের অর্থ হল পাঁচ রাজ্যে সংক্রমণ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়া, যার প্রভাব পড়বে অন্য রাজ্যেও। আবার পাঁচ রাজ্যে সময়ে ভোট করাতে মরিয়া কমিশন।
সূত্রের মতে, খুব দ্রুত ভোটের দিন ক্ষণ ঘোষণা করতে চাইছে কমিশন। তার ঠিক আগে আজ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে যান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ, এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া, আইসিএমআর-এর প্রধান বলরাম ভার্গব। করোনা আবহে ভোট হলে কী কী সমস্যা ও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে তা নিয়ে কমিশন কর্তাদের বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়।
বলা হয়, বর্তমানে দেশে যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তার জন্য আশি শতাংশ দায়ী হল ওমিক্রন প্রজাতি। এই প্রজাতিতে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের অধিকাংশই যে ঘরে থেকেই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন— সেই বিষয়টিও কমিশন কর্তাদের জানানো হয়।
গোড়া থেকেই এ যাত্রায় ভার্চুয়াল জনসভা করা যায় কি না তা ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কমিশন। গত কাল উত্তরাখণ্ড আদালতও কমিশনকে ভার্চুয়াল জনসভার পরামর্শ দেয়। সূত্রের মতে, স্বাস্থ্য কর্তারাও ভার্চুয়াল জনসভার প্রশ্নে সায় দেন। কারণ যে কোনও ভোটমুখী রাজ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর অন্যতম উৎস হল ওই জনসভাগুলি। বৈঠক চলাকালীন এক সময়ে জল্পনা রটে যায় যে করোনা আবহে ভোট করানো ও জনসভায় আপত্তি জানিয়েছেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল। যদিও পরে কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, তিনি ওই বৈঠকে যোগ দেননি।
কমিশন সূত্রের মতে, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বৈঠকের পরে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লার সঙ্গেও ভোটমুখী রাজ্যগুলির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। সূত্রের মতে, তার পরেই আজ রাতে পাঁচ ভোটমুখী রাজ্যে আধাসেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। ২২৫ কম্পানি আধাসেনা মোতায়েন হবে উত্তরপ্রদেশে।
আর একটি সিদ্ধান্তে আজ কমিশন জানিয়েছে, আসন্ন ভোটে মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে বিধানসভা পিছু খরচের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্র পিছু ২৮ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারতেন প্রার্থীরা, যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ লক্ষ। তবে গোয়া, মণিপুরের মতো ছোট রাজ্যে ওই খরচের উর্ধ্বসীমা ২০ লক্ষ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৮ লক্ষ। তেমনি বড় রাজ্যের ক্ষেত্রে লোকসভা পিছু খরচ ৭০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৫ লক্ষ। আর ছোট রাজ্যের লোকসভা কেন্দ্রপিছু ৫৪ লক্ষের পরিবর্তে এখন থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করা যাবে।