নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভ চেন্নাইয়ে। ছবি: রয়টার্স
হিন্দি ছবির সংলাপ ধার করেই হোক, তবু স্লোগানটা জনপ্রিয়তা পেল নিমেষে। দিল্লির কনট প্লেসে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে জড়ো হওয়া ভিড়ে প্ল্যাকার্ড দেখা গেল, ‘মাই নেম ইজ় খান অ্যান্ড আই অ্যাম অ্যান ইন্ডিয়ান।’
গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভে উত্তাল রাজধানী তুলনায় আজ কিছুটা শান্ত। তবু বিরাম নেই প্রতিবাদে। গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে এমসের ডাক্তারেরা এসেছিলেন কনট প্লেসের জমায়েতে। ছিলেন অধ্যাপকেরা, ছাত্রেরা, শিল্পীরা। ছিল আরও স্লোগান— ‘ডর কে আগে পিস হ্যায়’, ‘মেক ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক এগেন’। চলছিল দেশাত্মবোধক গান, কবিতা পাঠ, বক্তৃতা। গান গাইলেন এমসের মনোচিকিৎসক অজয় বর্মা। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষ বললেন, ‘‘যে অবস্থাটা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেটা ‘কাশ্মীরের মতো স্বাভাবিক অবস্থা’। আমরা এর থেকে রেহাই চাই।’’
দিল্লির নিজ়ামুদ্দিনে মুসাফির খানা পার্কে এসেছিলেন কয়েকশো মানুষ। ছাত্র নেতা উমর খালিদ সেখানে বললেন, ‘‘আমরা কী ভাবে দেশাত্মবোধের প্রমাণ দেব? ভারতের মুসলিমরা দুর্ঘটনাবশত মুসলিম নন। তাঁরা নিজেদের ইচ্ছেয় সেটা বেছে নিয়েছেন।’’ সভার বাইরে মোতায়েন ছিল বিরাট পুলিশবাহিনী। সমকামী-রূপান্তরকামীরা যন্তর-মন্তরে সভা করে প্রশ্ন তোলেন, এনআরসি কার্যকর হওয়ার পরে পরিবার যদি ব্রাত্য করে দেয়, তা হলে তাঁরা নাগরিকত্ব প্রমাণ করবেন কী করে?
জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে প্রতিবাদসভায় যোগ দেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। সংঘর্ষের এলাকার হাসপাতালে পুলিশের ঢোকা নিয়ে আপত্তি তোলে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। জয়পুরে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের ‘সংবিধান বাঁচাও’ মিছিলে যোগ দেন লাখ তিনেক মানুষ। সিপিআই, সিপিএম, আপ, এসপি, আরএলডি, সংখ্যালঘু সমাজের প্রতিনিধিরাও প্রায় তিন কিলোমিটারের এই মৌন মিছিলে হাঁটেন। ছাত্র-যুবদের শান্তিপূর্ণ মিছিল হয় পুণেতেও। তামিলনাড়ুতে বিক্ষোভ হয় চেন্নাই ও মাদুরাইতে।
আজ বেঙ্গালুরু টাউন হলে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে সভা করেছে বিজেপি-আরএসএস। সেই সভায় যোগ দিয়ে ফেরার পথে বরুণ নামে এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। স্বাভাবিক হচ্ছে মধ্যপ্রদেশ। আজ জব্বলপুরে ৭ ঘণ্টার জন্য কার্ফু তোলা হয়েছে।