বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশে লাইনচ্যুত হয় চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস। ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশের গোন্ডায় ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে গত বৃহস্পতিবার চার জনের প্রাণ গিয়েছিল। দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ অনুসন্ধানে ছয় সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করেছিল রেল। তদন্তকারী দলের রিপোর্ট অনুযায়ী, রেললাইনে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই দুর্ঘটনা। রেলের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, প্রাথমিক স্তরের এই তদন্তে সব বিষয় যাচাই করা সম্ভব হয়নি। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার (চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি)-এর তদন্তে উঠে আসবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
হিন্দিতে লেখা রেলের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনার আগেই রেলের লখনউ ডিভিশনের এক বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার রেললাইনে ত্রুটি লক্ষ করেন। ওই ইঞ্জিনিয়ার লক্ষ করেছিলেন যে, রেললাইনের ওই অংশের বাঁধন তেমন ‘পোক্ত’ নয়। তাই সেটি যথাযথ ভাবে কাজ করছিল না। রিপোর্ট মোতাবেক, এই পর্যবেক্ষণের পরেই রেলের বিভাগীয় ওই ইঞ্জিনিয়ার এক জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারকে রেললাইনে ‘দুর্বলতার’ বিষয়টি জানান। তদন্তকারী দলের দাবি, আগে থেকে সতর্ক করা হলেও আলাদা করে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, রেললাইন ‘দুর্বল’ থাকা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসকে পূর্ণ গতিতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যে লাইনে কোনও দূরপাল্লার ট্রেনের প্রতি ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার বেগে যাওয়ার কথা, সেই লাইনে ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস ছুটেছিল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে। তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের আগে ছয় সদস্যের দলটি ট্রেনটির চালক, ম্যানেজার (গার্ড), স্টেশনমাস্টার-সহ বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে।
এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক পঙ্কজ সিংহ বলেন, “কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছেন। ওই তদন্তে দুর্ঘটনার প্রতিটি সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখা হবে।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “তদন্তকারী দলের দেওয়া রিপোর্টে সব ক’টি গুরুত্বপূর্ণ দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই এই রিপোর্টকে চূড়ান্ত বলে ধরে নেওয়া ঠিক হবে না।”
গত বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা ও মনকাপুরের মাঝে জিলাহী স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয় ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের ১০-১২টি কামরা। ট্রেনটি চণ্ডীগড় থেকে অসমের ডিব্রুগড়ের উদ্দেশে যাচ্ছিল।