Priyanka Gandhi Vadra

মোদীর কেন্দ্রে পৌঁছে সঙ্ঘকে নিশানা প্রিয়ঙ্কার

রবিদাস জয়ন্তীতে প্রিয়ঙ্কার সফর নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:২৩
Share:

সন্ত রবিদাসের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বারাণসীর রবিদাস মন্দিরের লঙ্গরে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। রবিবার। ছবি: পিটিআই

প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে গিয়ে ঘুরিয়ে নরেন্দ্র মোদীর দল ও সরকারের নীতিকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। চতুর্দশ শতকের ভক্তি আন্দোলনের পথিকৃত সন্ত রবিদাসের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে একটি সভায় আজ তিনি বলেন, সমাজে বিভেদ মুক্তির শিক্ষা দিয়েছিলেন রবিদাস। আজ দেশে যখন হিংসা ও ঘৃণার বাতাবরণ, তখন সেই ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

Advertisement

বারাণসীতে প্রিয়ঙ্কার সফর ছিল অরাজনৈতিক। রবিদাস মন্দিরে প্রার্থনা সেরে লঙ্গরে বসে মধ্যাহ্নভোজ সারেন প্রিয়ঙ্কা। তার পরে যোগ দেন একটি সভায়। সেখানে পরোক্ষে সঙ্ঘ পরিবারকে বিঁধে কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘‘সন্ত রবিদাস রাম-রহিমকে এক ভাবে দেখার কথা বলতেন। তাঁর শিক্ষা ছিল, আমরা সকলেই এক ঈশ্বরের অংশ। আজ সেই ভাবনাকে মনে রাখতে হবে।’’ প্রিয়ঙ্কার কথায়, ‘‘রবিদাস এমন এক সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে শোষণ থাকবে না, সব মানুষকে সমান ভাবে শ্রদ্ধা করা হবে। আজ সমাজে এত হিংসার মধ্যে রবিদাসের শিক্ষাকে সামনে রেখে এগোনো দরকার। এই সময়ে এটা খুবই জরুরি।’’ অনেকেই মনে করছেন, রবিদাস জয়ন্তী উপলক্ষে মোদীর কেন্দ্রে অরাজনৈতিক সফরকে বেছে নিয়ে ঘুরিয়ে বিজেপিকেই নিশানা করেছেন প্রিয়ঙ্কা।

তবে রবিদাস জয়ন্তীতে প্রিয়ঙ্কার সফর নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। তাঁর দাবি, কংগ্রেস, বিজেপির মতো দলগুলি রবিদাসকে কখনওই সম্মান দেয়নি। এখন সেই দলের নেতারাই রাজনৈতিক স্বার্থে রবিদাস মন্দিরে ছুটছেন। টুইটারে মায়াবতী আজ লিখেছেন, ‘‘ক্ষমতায় থাকার সময়ে কংগ্রেস ও বিজেপি নেতারা রবিদাসকে শ্রদ্ধা জানাননি, সম্মান দেননি। এখন ক্ষমতা থেকে দূরে থাকায় অনেক নাটক করছেন তাঁরা। মন্দির ও অন্য অনেক জায়গায় তাঁদের দেখা যাচ্ছে। এর পিছনে রয়েছে স্বার্থের খেলা।’’ বিএসপি নেত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি বিজেপির প্রসঙ্গ বিবৃতিতে রাখলেও আসলে নিশানা করছেন প্রিয়ঙ্কাকেই। কারণ, কেন্দ্রে ও উত্তরপ্রদেশে এখন ক্ষমতা থেকে দূরে রয়েছে কংগ্রেসই, বিজেপি নয়। এ সঙ্গেই অবশ্য মায়াবতীর দাবি, বিএসপি-ই একমাত্র দল, যারা উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় থাকার সময়ে রবিদাসের সম্মানে সমাজের বিভিন্ন স্তরে কাজ করতে উদ্যোগী হয়েছিল। বিরোধী আসনে বসে এই দলগুলি সে সব কাজে বাধা দিয়েছিল তখন।

Advertisement

আরও পড়ুন: সরপঞ্চ হওয়ার দৌড়ে মূক ও বধির যুবক

মায়াবতীর মতো নেত্রীর তরফে প্রিয়ঙ্কাকে আক্রমণের প্রেক্ষাপটও রয়েছে। কারণ, আজ সকালে বারাণসী পৌঁছনোর আগেই সন্ত রবিদাসকে নিয়ে টুইট করেন কংগ্রেস নেত্রী। তার পর শিরগোবর্ধনে রবিদাস জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে পৌঁছন। প্রিয়ঙ্কা মন্দিরে পৌঁছলে মাথায় কাপড় বেঁধে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। রবিদাসের মূর্তিতে মালা দিয়ে পরিক্রমা করেন প্রিয়ঙ্কা। তার পর মন্দিরের লঙ্গরে পৌঁছন তিনি। সেখানে মাটিতে বসে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। পরে নিজের থালা তুলে রেখে আসেন বাসনমাজার নির্ধারিত ঘরে। প্রিয়ঙ্কার লঙ্গরে বসে থাকার ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেরই মতে, অরাজনৈতিক সফরকে বেছে নিয়ে রবিদাসের অনুগামীদের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কংগ্রেস নেত্রী। আগাগোড়া আজ তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা।

এখানেই শেষ নয়, রবিদাস মন্দিরে পৌঁছে মায়াবতীর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভীম সেনার নেতা চন্দ্রশেখর আজাদের শারীরিক অবস্থারও খোঁজ নেন প্রিয়ঙ্কা। বারাণসী বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে রাস্তায় চন্দ্রশেখরকে দেখতে পেয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন প্রিয়ঙ্কা। হাসি মুখে বলেন, ‘‘ভাই, আপনি ঠিক আছেন তো?’’ শুভেচ্ছা বিনিময়ের পরে বিমানবন্দরের রাস্তা ধরে কংগ্রেস নেত্রীর কনভয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement