পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি নিগ্রহের প্রতিবাদে ধর্নায় প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। সোমবার ইন্ডিয়া গেটের সামনে। ছবি: পিটিআই।
ইন্ডিয়া গেটের সামনে আচমকাই প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা যে ধর্নায় বসে পড়বেন, তা বোধহয় পুলিশের অফিসারেরাও আশা করেননি। আজ বিকেল ৪টের সময় ঠিক সেই কাজটাই করলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা। পাশে সুস্মিতা দেব-সহ জনা দশেক কংগ্রেসের নেতা-কর্মী। ভিড়টা আস্তে আস্তে বাড়ল। প্রথমে কয়েকশো। তারপরে হাজার খানেক। জমায়েতে ভিড় ঠেকাতে আশেপাশের আধ ডজন মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন এবং রবিবার রাতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া-আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি নিগ্রহের প্রতিবাদে প্রিয়ঙ্কার নেতৃত্বেই রাস্তায় নামলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব।
রাহুল গাঁধী সকালে টুইট করেছিলেন। সনিয়া গাঁধী বিবৃতি দিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। কিন্তু রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের পরে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘আমি মা। এই ছাত্রছাত্রীরা আমার সন্তানের বয়সি। তাঁদের লাইব্রেরি থেকে টেনে বার করে এনে হামলা করেছে পুলিশ। দেশের আত্মার উপরে হামলা করেছে। এই পড়ুয়ারা দেশের আত্মা। তাঁদের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। সংবিধান সেই অধিকার দিয়েছে। কিন্তু এই সরকার তো সংবিধানের উপরেই হামলা করেছে। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে একনায়কতন্ত্র চলবে না।’’
রাজধানীর কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া উপেক্ষা করে টানা দু’ঘণ্টা ইন্ডিয়া গেটের সামনে ধর্নায় বসেছেন প্রিয়ঙ্কা। একে একে ইন্ডিয়া গেটের সামনে হাজির হয়েছেন আহমেদ পটেল, এ কে অ্যান্টনি, গুলাম নবি আজাদ, কে সি বেণুগোপাল-সহ কংগ্রেসের প্রবীণেরা। তাঁরাও রাজপথেই বসে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: মোদীর ‘পোশাক’ মন্তব্যেই কি বেড়েছে পুলিশের সাহস?
প্রিয়ঙ্কা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের উপরে হামলা, মহিলাদের উপরে নিত্যদিন অত্যাচার নিয়ে কেন প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেন না? প্রধানমন্ত্রী এ সব নিয়ে বলুন। রোজগার নিয়ে বলুন। ডুবন্ত অর্থনীতি নিয়ে বলুন।’’ এর পরেও যে কংগ্রেসের আন্দোলন চলবে, সেই ইঙ্গিত দিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘সরকার ভুল করছে। নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন সংবিধানের বিরোধী। কংগ্রেসের সবাই সংবিধান রক্ষার জন্য লড়বেন। সব ভারতবাসীকে এর বিরুদ্ধে একজোট করতে হবে।’’
প্রিয়ঙ্কাদের ধর্নার পরেও ইন্ডিয়া গেটের কাছে রাত পর্যন্ত পড়ুয়া ও দিল্লির নাগরিকদের প্রতিবাদ সভা চলে। সেখানে সংবিধানের প্রস্তাবনা অংশটি পড়া হয়। যে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সেই দিল্লি পুলিশের কর্মীদের জল-বিস্কুট দেন প্রতিবাদীরা।