প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। ফাইল চিত্র।
করোনার প্রকোপ কিছুটা কমলেই লখনউয়ে ঘাঁটি গেড়ে বসবেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশের ভোটকে পাখির চোখ করে এখন থেকেই মাঠে নেমে পড়তে প্রিয়ঙ্কার জন্য লখনউয়ে বাড়িও ঠিক হয়ে গিয়েছে। তার ঠিক আগে উত্তরপ্রদেশে দুষ্কৃতীদের গুলিতে আট জন পুলিশ কর্মী নিহত হওয়ায় যোগী আদিত্যনাথের সরকারের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র পাওয়া গেল বলে মনে করছে প্রিয়ঙ্কা-শিবির।
শুক্রবারের ঘটনা নিয়ে শনিবার সকালেই প্রিয়ঙ্কা কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশ দেন, যোগী জমানায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে প্রচারে নামতে হবে। দলের নেতাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ চলছে। পুলিশও সুরক্ষিত নয়।’’ বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা দলের নেতাদের বলেন, রাজ্য অপরাধী, ক্ষমতায় থাকা নেতা ও অফিসারদের মধ্যে যে আঁতাত চলছে, তা মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। সে কারণেই আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে। মানুষকে বোঝাতে হবে যে, ক্ষমতায় বসে থাকা বিজেপি নেতারাই অপরাধীদের মনোবল বাড়াচ্ছেন।
কানপুরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে আট পুলিশ কর্মীর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে বিজেপি নেতারা পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। বারাণসীর কংগ্রেস নেতা অজয় রাইয়ের দাবি, বিজেপির জনপ্রতিনিধি ও নেতারাই পুলিশের উপর গুন্ডাগিরি করছেন। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে বৈঠকে উত্তরপ্রদেশের রাজ্য সভাপতি অজয় কুমার লাল্লুও বলেন, বিজেপি নেতারাই অপরাধীদের লালন-পালন করছেন। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা আজ আহত পুলিশ-কর্মীদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে দেখাও করেন।
করোনার জন্য এখনই রাস্তায় নামা সম্ভব নয়। তাই প্রিয়ঙ্কা নির্দেশ দিয়েছেন, রবিবার অনলাইনে প্রচার চলবে। সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানানো হবে, তাঁরাও যেন সরব হন। আমজনতার কাছে কংগ্রেস আর্জি জানাবে, রাজ্যে অপরাধ বেড়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে তাঁরা যেন ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে সরব হন। অথবা নিজেদের সমস্যা জেলা কংগ্রেস কমিটি বা কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেন। কংগ্রেস অভিযোগ রাজ্যপাল ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে পাঠাবে।
প্রিয়ঙ্কা যখন উত্তরপ্রদেশে দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন, তখন রাহুল গাঁধী বিহারের ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই রাহুল বিহারের কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলেন। বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত শক্তিসিন গোহিলকে রাহুল বলেছেন, আরজেডি ও অন্যান্য শরিক দলের সঙ্গে মিলে ইতিবাচক কর্মসূচি তৈরি করতে হবে। শুধু নীতীশ কুমারের সরকারের সমালোচনা করলে চলবে না। বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা, রোজগার, চাকরি, বিহারের আইন-শৃঙ্খলা সমস্যার মতো বিষয় তুলে ধরতে হবে। কংগ্রেসের জোট ক্ষমতায় এলে কী করবে, তা-ও বলতে হবে।
লকডাউনের পর উত্তরপ্রদেশ ও বিহারেই সবথেকে বেশি পরিযায়ী শ্রমিক কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরেছেন। কংগ্রেস নেতারা তাই মনে করছেন, বিহার ভোটে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার প্রশ্নটি বড় বিষয় হয়ে উঠবে।