দলীয় মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা। রবিবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে। পিটিআই
লোকসভার আগে অন্তত ডজনখানেক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তৃতীয় বার লোকসভায় জিততে হলে ওই রাজ্যগুলিতে ক্ষমতা ধরে রাখা যে জরুরি, তা বিলক্ষণ জানেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই আজ বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা নিজেদের রাজ্যে কেমন কাজ করছেন, তা খতিয়ে দেখতে বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আগামিকাল রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেবেন দ্রৌপদী মুর্মু। সেই শপথগ্রহণ উপলক্ষে ১৮টি বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা উপমুখ্যমন্ত্রীরা আজ সকালেই দিল্লি এসে গিয়েছিলেন। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পরিষদের বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে মোদী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, দলের প্রশাসনিক শাখার সদস্য তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব এবং বিনয় সহস্রবুদ্ধে। সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকে যে কয়েকটি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়, তার মধ্যে প্রধানত ছিল কেন্দ্রীয় জনউন্নয়নমুখী প্রকল্প বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে একশো শতাংশ রূপায়ণের উপরে। সূত্রের মতে, মোদী বৈঠকে বলেন, উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন প্রমাণ করেছে, প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে যদি জনমুখী প্রকল্পের ফায়দা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়, সে ক্ষেত্রে মানুষও ভোটের বাক্সে বিজেপিকে ভোটদিতে দ্বিধা করেন না। সেই কারণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের যত দ্রুত সম্ভব জনউন্নয়ন প্রকল্পের ফায়দা আমজনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় জনমুখী প্রকল্পের কাজের সুফল মানুষ পাচ্ছেন কি না, তা মুখ্যমন্ত্রীদের ব্যক্তিগত ভাবে নজর দেওয়ার উপরে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে যুব ও নারী শক্তির উন্নয়নে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের মতে, বৈঠকে নারীদের ক্ষমতায়নের উন্নয়নে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়ার উপরে সওয়াল করা হয়। উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ দেখিয়ে বৈঠকে বলা হয়, ওই রাজ্যে নারীদের কাছে জনকল্যাণমুখী পরিকল্পনা দেওয়ার সুফল পেয়েছে দল। মহিলারা ঢেলে ভোট দিয়েছিল বিজেপিকে। তাই মহিলাদের ভোট নিশ্চিত করার উপরে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া শিশুদের অপুষ্টি দূর করতে অপুষ্টি দূরীকরণেও বিশেষ জোর দেওয়া হয় বৈঠকে।
সদ্য সমাপ্ত হায়দরাবাদের বৈঠকে অন্ত্যজ মুসলিম সমাজের ভোট কুড়নোর কৌশল হাতে নিয়েছে দল। আজ বৈঠকে অন্য সব সমাজের মতোই মুসলিম সমাজের কাছেও উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার প্রশ্নে সওয়াল করা হয়। সেই উদ্যোগের অংশহিসাবে আগামিকাল হরিয়ানার গুরুগ্রামে শুরু হতে চলেছে তিন দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। সূত্রের মতে, ওই বৈঠকে কী ভাবে মুসলিম সমাজের কাছে পৌঁছনো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার নেতা সৈয়দ ইয়াসির জিলানি বলেন, ‘‘আগামী লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু সমাজের ভোট কুড়নোর জন্য বিশেষ ভাবে তৎপর হয়েছে দল। দলের লক্ষ্যই হল, যত বেশি সম্ভব মুসলিমদের কাছে পৌঁছে ভোটবাক্সে সমর্থন কুড়নো। কী ভাবে সেই সংখ্যালঘুদের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হয়, সেই রণকৌশল ঠিক করতেই ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’