ছবি: সংগৃহীত।
আলু-পেঁয়াজ থেকে সর্ষে-বাদাম তেল। বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমার কোনও লক্ষণই নেই। শুধু শহরে নয়। গ্রামের মানুষের পকেটেও মূল্যবৃদ্ধির আঁচ লাগতে শুরু করেছে। উল্টো দিকে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের পরে এ বার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীদের মহার্ঘভাতাও (ডিএ) আগামী জুন পর্যন্ত না-বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল মোদী সরকার।
কোভিড মোকাবিলায় বাড়তি খরচ, তার উপরে লকডাউনের ধাক্কায় সরকারের আয় কমে যাওয়ায় গত এপ্রিলেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ১ কোটি ১৩ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীর ডিএ ২০২১-এর জুন পর্যন্ত বাড়ানো হবে না। বৃহস্পতিবার কেন্দ্র জানিয়েছে, জুন পর্যন্ত ১৪.৫ লক্ষ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীরও ডিএ বাড়বে না।
অক্টোবরে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৬১ শতাংশে পৌঁছেছিল। গত ৭৭ মাসে, বস্তুত মোদী জমানায়, মূল্যবৃদ্ধির হার এত চড়ায় ওঠেনি। আজ শ্রম মন্ত্রক জানিয়েছে, খেতমজুর ও গ্রামের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির হারও অক্টোবরে বেড়েছে। দুই শ্রেণির ক্ষেত্রেই মূল্যবৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশের আশেপাশে। পরিসংখ্যান বলছে, সব ক্ষেত্রে একটাই কারণ। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। যা অক্টোবরে ১১ শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: চিনকে নজরে রাখতেই ফের ঢুকব হু-তে’
আজ কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, এক দিকে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। অন্য দিকে, মোদী সরকার ডিএ বাড়ানো বন্ধ করে রেখেছে। রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘সরকারি কর্মীদের হাল খারাপ। (আর) পুঁজিবাদী বন্ধুরা মুনাফা কামাতে ব্যস্ত।’’
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করছেন, কিছু জেলায় বন্যার জন্য আনাজের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলেই এই মূল্যবৃদ্ধি। তবে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, চড়া মূল্যবৃদ্ধির হার অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর পথে বাধা হয়ে উঠতে পারে। মোদী সরকার একাধিক বার দাবি করেছে, লকডাউনের গ্রাস কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, মূল্যবৃদ্ধিই সব থেকে চিন্তার কারণ। কারণ, জোগানের সমস্যা মেটার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখা রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরই প্রাথমিক দায়িত্ব। সেটা না-হলে তাদের সুদ নীতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: ভুটানের ভিতরেই গ্রাম বানিয়েছে চিন!
অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, নভেম্বরে যদি মূল্যবৃদ্ধি না-কমে, তা হলে চিন্তা রয়েছে। কারণ, ডিসেম্বরের গোড়াতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ নীতি ঠিক করতে বৈঠকে বসবে। মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে তারা যদি সুদ বাড়ানোর দিকে হাঁটে, তা হলে আর্থিক বৃদ্ধি ফেরার যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাতে ধাক্কা লাগবে।