কলেজ চত্বরে নবাগতদের র্যাগিং করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অন্তর্বাস পরে কাদাজলে গড়াগড়ি খাচ্ছেন কিছু পড়ুয়া। ওই অবস্থায় কেউ কেউ যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ অঙ্গভঙ্গিও করছেন। তা-ই দেখে আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জনের অট্টহাসি! ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজের এমন একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তামিলনাড়ুর কলেজের নবাগত পড়ুয়াদের উপর র্যাগিংয়ের শিহরণ জাগানো ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে যিনি পোস্ট করেছেন, তিনি নিজেকে ওই কলেজেরই পড়ুয়া বলে পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, র্যাগিংয়ের সময় নবাগতদের যৌনাঙ্গেও আঘাত করা হয়। প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়ো ঘিরে তোলপাড় শুরু হতেই কলেজের অধ্যক্ষের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। তার প্রেক্ষিতে কলেজের ডিরেক্টর জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। সাত পড়ুয়াকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে খবর।
‘রেডিট’-এ র্যাগিংয়ের ভিডিয়োটি যিনি পোস্ট করেছেন, তাঁর দাবি, নগ্ন অবস্থায় কলেজের মাঠে নবাগত পড়ুয়াদের প্যারেড করতে বাধ্য করেন সিনিয়ররা। হাতে বোতল ধরিয়ে হস্তমৈথুন করার ভান করতেও বাধ্য করা হয় তাঁদের। পরে যদিও ওই ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যম থেকে মুছে দেওয়া হয়। অভিযোগ, গত ৯ অক্টোবর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে র্যাগিং করা হয় নবীনদের। তাজ্জব ব্যাপার, ওই প্রতিযোগিতা-অনুষ্ঠানের বিচারক পদে ছিলেন ওই হস্টেলের ওয়ার্ডেন, ডেপুটি ওয়ার্ডেন এবং কয়েক জন চিকিৎসক। শুধু তা-ই নয়, ‘বিচারক’রা চলে যাওয়ার পর নতুন পড়ুয়াদের ছাদে নিয়ে গিয়ে উল্টো করে ঝুলিয়েও রাখা হয় বলে দাবি করা হয়েছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক নবাগতদের দাবি, কলেজের সিনিয়রদের নাম, ঠিকানা জন্মতারিখ বলতে না পারলেই র্যাগিং করা হয় হস্টেলে। খাবার ঘরের টেবিলে বসতেও সিনিয়রদের অনুমতি নিতে হয়।
র্যাগিং সংক্রান্ত একটি অভিযোগও জমা পড়েছে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে। যদিও যিনি অভিযোগ করেছেন, অভিযোগপত্রে তিনি নিজের কোনও পরিচয় উল্লেখ করেননি বলেই খবর কলেজ সূত্রে। কলেজ সূত্রে খবর, একটি কমিটি তৈরি করে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই সাত জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কলেজের ডিরেক্টর বিক্রম ম্যাথিউ বলেন, ‘‘একটা চিঠি পেয়েছি আমরা। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। পদক্ষেপও করা হবে। কলেজ চত্বরে র্যাগিংকে আমরা মোটেই সমর্থন করি না। অভিযোগ প্রমাণিত হতে দোষীদের কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’’