সংসদ ভবনের উদ্বোধনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদীকে মোদী সরকার আমন্ত্রণ জানায়নি বলে অভিযোগ কংগ্রেস সভাপতি খড়্গের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আগামী ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী মোদী নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করতে চলেছেন। সেই কর্মসূচিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে! সোমবার ধারাবাহিক টুইটারে বিষয়টি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন তিনি।
একটি টুইটে খড়্গে লিখেছেন, ‘‘নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। সংসদ হল ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন প্রণয়নকারী সংস্থা এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন তার সর্বোচ্চ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ।’’ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও ২৮ মের ওই কর্মসূচিতে অনাহুত বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি।
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সংসদের অভিভাবক হলেন রাষ্ট্রপতি। কারণ, সংবিধানের ৭৯ ধারায় বলা হয়েছে, সংসদ রাষ্ট্রপতি, লোকসভা ও রাজ্যসভা নিয়ে গঠিত। তাই তাঁরই উচিত নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করা। খড়্গের অভিযোগ, তা না করে লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নিজেই সব কৃতিত্ব নিতে উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি নিজে প্রচারের সব আলো শুষে নিতে চান। সেই কারণে উপেক্ষা করা হচ্ছে দেশের প্রথম আদিবাসী (তফসিলি জনজাতি) রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদীকে। আমন্ত্রণ পাননি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা দলিত সমাজের প্রতিনিধি কোবিন্দও।
অন্য একটি টুইটে খড়্গে লিখেছেন, ‘‘ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে মোদী সরকার শুধু ভোটের কারণেই দলিত এবং জনজাতি সম্প্রদায় থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন কোবিন্দকে নতুন সংসদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়নি মোদী সরকার! অন্য একটি টুইটে, খড়গের মন্তব্য, ‘‘দেশের প্রথম নাগরিকও সংসদের উদ্বোধনে ব্রাত্য!’’ পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি এবং আরএসএস কার্যত নিয়মরক্ষায় পরিণত করেছে রাষ্ট্রপতির দফতরকে।’’
বিরোধীদের অভিযোগ, নতুন ভবনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতিকে উপেক্ষা করার এই ইতিহাস নতুন নয়। নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস হয়েছিল ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ সালে। কিন্তু সেই শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পরবর্তী ধাপে ২০২২ সালের ১১ জুলাই যখন জাতীয় প্রতীক সিংহের ব্রোঞ্জের মূর্তির উদ্বোধন হয় তখনও আমন্ত্রিতের তালিকায় নাম ছিল না কোবিন্দের। যদিও সে সময়ও রাষ্ট্রপতির আসনে ছিলেন তিনি।
ঘটনাচক্রে ২৮ মে দিনটি বিনায়ক দামোদর সাভারকরের ১৪০তম জন্মবার্ষিকী। বিরোধীদের অভিযোগ, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি, জওহরলাল নেহরুর জন্মদিবসকে উপেক্ষা করে সাভারকরের জন্মদিনকে সংসদ ভবনের উদ্বোধনের জন্য বেছে নিয়ে এক দিকে হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে, অন্য দিকে মহারাষ্ট্রের ভোটদাতাদের ‘বার্তা’ দিতে চাইছে বিজেপি।