রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। — ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপতি হিসাবে এই প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে বক্তৃতা দিলেন দ্রৌপদী মুর্মু। সংবিধানকে সবার উপরে তুলে ধরে তিনি প্রান্তিক এবং দুর্বল শ্রেণির মানুষের জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের বিশদ বিবরণ দিয়েছেন তাঁর বক্তৃতায়। পাশাপাশি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারত যে সম্মান অর্জন করেছে, তারই ফলস্বরূপ ভারতের নতুন সুযোগ ও দায়িত্ব মিলেছে। যেমন জি২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব করছে ভারত।
রাষ্ট্রপতির কথায়, “বিশ্ব মঞ্চে ভারত যে সম্মান অর্জন করেছে, তার ফলে দেশের সামনে নতুন সুযোগ এবং দায়িত্ব মিলেছে। যেমন আপনারা সবাই জানেন, এই বছর জি ২০ সংগঠনের সভাপতিত্ব করছে ভারত। বিশ্ববন্ধুত্বের প্রশ্নে নিজেদের আদর্শ অনুযায়ী আমরা সবার শান্তি এবং সমৃদ্ধির পক্ষপাতী।”
জি ২০-র সভাপতিত্ব নিয়ে এর আগে মোদী সরকারের পক্ষ থেকে এমন স্বর শোনা গিয়েছে যা থেকে মনে হয়, তা বিশেষ কৃতিত্বস্বরূপ দেওয়া হয়েছে ভারতকে। পাল্টা বক্তব্যে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস-সহ অন্যান্যরাও সরব হয়ে বলেছে এই সভাপতিত্বের দায়িত্ব প্রত্যেক বছর ঘুরে ঘুরে সদস্য দেশগুলির হাতে যায়। এক দেশ থেকে অন্যে এই দায়িত্বের ব্যাটনটির হাত বদল হয়। তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সরকারি বিষয়টিকে তাদের ‘সাফল্য’ হিসাবে দেশবাসীকে দেখিয়ে ভোটের ময়দানে হাততালি কুড়োতে চাইছে।
রাষ্ট্রপতির বক্তব্য, “সংবিধান প্রণেতারা আমাদের একটি মানচিত্র দিয়েছেন, সেই সঙ্গে নৈতিক মানদণ্ডও তৈরি করে দিয়েছেন। সেই রাস্তায় চলাটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।” বি আর অম্বেডকরকে স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেছেন “সংবিধান প্রণেতাদের দূরদৃষ্টি প্রতিফলিত হচ্ছে সংবিধানে। আর এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রকে সমানে পথ দেখাচ্ছে।” রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এক দিকে আজ সংবিধানকে তুলে ধরেছেন দেশের রাষ্ট্রপতি। অন্য দিকে দেশের বিরোধী দলেরা সমস্বর, মোদী সরকার সংবিধান প্রদত্ত সব রকম মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা করছে। সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থাকে নিজেদের কুক্ষিগত করছে। আরও অভিযোগ, বিজেপি সরকার বিভেদ এবং ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতিকে ক্ষমতায় থাকার অস্ত্র করে তুলেছে। রাষ্ট্রপতি অবশ্য আজ বলেন, “সমস্ত ভারতীয় আসলে এক। আমরা গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসাবে সফল হয়েছি, কারণ এত সম্প্রদায় এবং ভাষা আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি বরং এক করেছে। এটাই ভারতের আত্মা।”