প্রশান্ত কিশোর। ফাইল ছবি।
তাঁর কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনা ছিল। সেই প্রশান্ত কিশোর টুইটে সমালোচনা করলেন কংগ্রেসের। রাহুল গাঁধীর দলকে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, লখিমপুর খেরির ঘটনায় কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীদের দ্রুত ও স্বতঃস্ফূর্ত পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা দেখে যাঁরা উচ্ছ্বসিত, তাঁদের জন্য বড় মনখারাপ অপেক্ষা করছে। দুর্ভাগ্যবশত, এই প্রাচীন দলের গভীর বদ্ধমূল সমস্যা ও কাঠামোগত দুর্বলতার কোনও চটজলদি সমাধান নেই।
গত ৫ অগস্ট দিল্লিতে রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। শোনা যায়, সেই বৈঠকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির ছিলেন পার্টির অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীও। রাজধানীর সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ এই সাক্ষাৎকে প্রশান্তের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার উপলক্ষ হিসেবে অভিহিত করে। সাংবাদিক মহলে 'পিকে' নামে পরিচিত প্রশান্ত নিজে জানান, বড় ঘোষণা আসছে। কিন্তু সেখানকার আলোচনা বিষয়ে যেমন কিছু জানা যায়নি, ঠিক তেমনই প্রশান্তও তাঁর কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি।
তার পর থেকে দ্রুত বদলে যেতে থাকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। কংগ্রেসে যোগ দেন বিহারের বাম নেতা কানহাইয়া কুমার। যোগদানের পথে গুজরাতের দলিত নেতা জিগ্নেশ মেবাণী। পঞ্জাবে বদলাতে হয় মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, প্রশান্তের তৈরি করা রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরই অমরেন্দ্র সিংহকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস হাইকমান্ড। এই গোটা পর্বে প্রশান্ত কিশোরের প্রকাশ্য উপস্থিতি নেই। বেশ কিছু দিন আড়ালে থাকার পর সম্প্রতি ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রচাররত মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা যায় প্রশান্তকে।
অন্য দিকে, কংগ্রেস ও রাহুল গাঁধীকে নিশানা করে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। এই প্রেক্ষিতে মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব ও গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীন কংগ্রেস নেতা লুইজিনহো ফালেইরোর তৃণমূলে যোগদান। এখানে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফালেইরো জানিয়েছেন, তৃণমূলের কোনও নেতা নয়, তাঁর সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে কথা বলেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি বিরোধী জোটের রাশ কংগ্রেসের হাতে থাক, তা চান না পিকে? যাঁর কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়ে নিত্য জল্পনা, তিনি কেন এমন করবেন?
এই প্রেক্ষিতেই লখিমপুর খেরিতে কংগ্রেসের রাহুল-প্রিয়ঙ্কার দৌত্য ফের প্রচারের আলোয় নিয়ে আসে দেশের এই প্রাচীন রাজনৈতিক দলকে। ৩৮ ঘণ্টা সীতাপুরের অতিথি নিবাসে আটকে থাকার পর লখিমপুরে মৃত কৃষকদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন প্রিয়ঙ্কা। বিমানবন্দরে সরকারি অসহযোগিতা নিয়ে ধরনা দেন রাহুল গাঁধী। এই পরিস্থিতিতে যখন একটি অংশ ফের কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনের আশায়, ঠিক তখন টুইট করে ‘গোড়ায় গলদ’ তুলে ধরলেন প্রশান্ত কিশোর।