Lakhimpur Kheri

Lakhimpur Kheri: গ্রেফতারি এড়াতে কি নেপাল পালালেন লখিমপুর-কাণ্ডে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পুত্র

২০১২-য় প্রথম বার অজয় মিশ্র টেনি বিধায়ক হন। সেই বছরই রাজনীতিতে হাতেখড়ি মনুর। বাবার চালের কল, পেট্রল পাম্পের ব্যবসা দেখভালের ভার তাঁর উপর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২১ ১১:২৬
Share:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্র মনু। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

শুক্রবার সকাল ১০টায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির পুত্র আশিস মিশ্র ওরফে মনু-র। তিনি হাজিরা দেননি। সুপ্রিম কোর্টে লখিমপুর মামলার শুনানির দিনই মনুকে সমন পাঠায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি, গ্রেফতারি এড়াতে সম্ভবত নেপালে পালিয়ে গিয়েছেন মন্ত্রী-পুত্র। কারণ পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর শেষ মোবাইল লোকেশনে নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন কোনও এলাকা চিহ্নিত হয়েছে। তার পর থেকে তাঁর কোনও খোঁজ নেই। শুক্রবার হাজিরাও দিলেন না।

Advertisement

ক’দিন আগে পর্যন্ত আশিস মিশ্র ওরফে মনু— এই নামে কাউকে চেনেন কি না জিজ্ঞেস করলে মাথা চুলকে উত্তরে বলতে হত, ‘না’। লখিমপুর খেরিতে রবিবারের ঘটনার পর থেকে সেই নাম এখন ঘুরছে লোকমুখে। অভিযোগ, আশিসের হাতেই ছিল ‘থর’ গাড়ির স্টিয়ারিং। যে গাড়ির তলায় পিষ্ট হয়ে ৪ জন কৃষকের মৃত্যুর অভিযোগ করছেন আন্দোলনরত কৃষকরা।

এই ঘটনার পর থেকে বিরোধী থেকে স্থানীয় মানুষ, মনুর গ্রেফতারির দাবি জানাচ্ছেন। এমনকি মৃত কৃষকদের পরিবারের তরফেও সুনির্দিষ্ট ভাবে মনু ও তাঁর পিতা অজয়ের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার হাজিরা এড়ানোয় ফের মনুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।

Advertisement

আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক, রাজনীতির মঞ্চে মনুর উত্থান কী ভাবে।

২০১২ সালে প্রথমবার অজয় মিশ্র বিধায়কের টিকিট পান। সেই বছরই রাজনীতিতে হাতেখড়ি মনুর। পাশাপাশি বাবার রাইস মিল ও পেট্রল পাম্পের ব্যবসা দেখভাল করার ভার ছিল আশিসের উপর।

ভালোবাসেন দামি এসইউভি নিয়ে এলাকায় ঘুরতে। সঙ্গে থাকে রীতিমতো বাহিনী। স্থানীয়দের দাবি, মাঝেমাঝেই হুটার বাজিয়ে ধুলো উড়িয়ে দিগন্তে মিলিয়ে যেতে দেখা যায় মনুর কনভয়। ‘বাহুবলী’ হিসেবেও নাকি তাঁর নামডাক ছিল।

সেই শুরু। তার পর থেকে ক্রমশ রকেট গতিতে উত্থান। যে মনুর ফেসবুকের দেওয়ালে খালি তাঁর বাবার কাজেরই পোস্ট থাকত, ২০১৪ নাগাদ তা বদলে যায় বিজেপি নেতাদের ছবি এবং গেরুয়া শিবিরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বর্ণনায়। গত কয়েক বছরে এলাকায় এতটাই দাপট বাড়ে মনুর যে, আসন্ন বিধানসভা ভোটে বাবার ছেড়ে যাওয়া নিঘাসন কেন্দ্র থেকে তাঁর প্রার্থিপদ নাকি প্রায় পাকা ছিল। গেরুয়া শিবিরের তরুণ ব্রাহ্মণ নেতা হিসেবেও তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ছিল। কিন্তু সবই গোলমাল করে দিল রবিবারের ঘটনা।

২০১৭ সালে বাবা অজয় মিশ্র ছেলেকে নিঘাসন আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। শোনা যায়, সে জন্য বিজেপি-র প্রভাবশালী রাজ্য নেতারাও মনুকে টিকিট দেওয়ার ব্যাপারে অজয়কে সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বদলে যায় সমীকরণ। টিকিট জোটেনি আশিসের। তা বলে এলাকা ছাড়েননি মনু। উল্টে কাজের পরিধি বাড়িয়ে নেন। ক’দিন আগেও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের স্মার্ট ফোন বিলির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং সংগঠক হিসেবে হাজির ছিলেন আশিস মিশ্র মনু।

বাবার মতোই মনু কুস্তি ভালোবাসেন। অজয়ের নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন কুস্তির আখড়ায় ছেলে আশিসের ব্যাপক প্রভাব। এই সূত্রে বার বার তাঁর নাম জড়িয়েছে বিভিন্ন হিংসাত্মক কার্যকলাপে। বিরোধীদের অভিযোগ, গুন্ডামি করে এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রাখা ছিল বাবা-ছেলের আসল উদ্দেশ্য। ওই এলাকা নেপাল সীমান্তবর্তী হওয়ায় বিভিন্ন সময় চোরাচালান সংক্রান্ত অভিযোগও বিজেপি নেতা বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে উঠেছে। যদিও সেই অভিযোগের কোনও তথ্য প্রমাণ নেই প্রশাসনের কাছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement