গত সপ্তাহে পিকে-র কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা খারিজ হয়ে যেতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, কী হবে প্রশান্তের ভবিষ্যৎ? যদিও, আগে থেকেই তৃণমূল ও তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)-র সঙ্গে আগামী নির্বাচনগুলির দায়িত্ব নিয়েছে পিকের সংস্থা আইপ্যাক। তা সত্ত্বেও, জাতীয় রাজনীতিতে প্রশান্তের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চলছিল।
মমতা ও প্রশান্ত —ফাইল চিত্র।
ভোটকুশলী হিসাবে তাঁদের সঙ্গেই আছেন প্রশান্ত কিশোর। শনিবার টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রাজধানী সফরে গিয়েছেন তিনি। সেখানেই পিকে-কে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, ‘‘দলের মধ্যে তাঁর ভূমিকা নিয়ে মতপার্থক্য ছিল। কিন্তু এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, তিনি ভোটকুশলী হিসাবেই দলে কাজ করবেন।’’
গত সপ্তাহে পিকে-র কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা খারিজ হয়ে যেতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, কী হবে প্রশান্তের ভবিষ্যৎ? যদিও, আগে থেকেই তৃণমূল ও তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)-র সঙ্গে আগামী নির্বাচনগুলির দায়িত্ব নিয়েছে পিকের সংস্থা আইপ্যাক। তা সত্ত্বেও, জাতীয় রাজনীতিতে প্রশান্তের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চলছিল।
এআইসিসি-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, কংগ্রেসে যোগদানের শর্ত হিসেবে তৃণমূল ও টিআরএসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল প্রশান্তকে। পিকের পাল্টা যুক্তি ছিল, আইপ্যাক ও তিনি পৃথক সত্তা, তাই সম্পর্ক ছিন্ন করার কোনও প্রশ্ন ওঠাই উচিত নয়।
কিন্তু আইপ্যাক ও প্রশান্তকে আলাদা করে দেখতে নারাজ এআইসিসি। ২০২১ সালের ২ মে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিনেই প্রশান্ত ঘোষণা করেছিলেন, তিনি আর ভোটকুশলীর কাজ করবেন না। কিন্তু তাঁর সংস্থা আইপ্যাক স্বতন্ত্রভাবে কাজ করবে। তাঁর এমন যুক্তি মানতে চাননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। একই সঙ্গে কংগ্রেসের সভাপতিত্ব কে সামলাবেন, তা নিয়ে পিকের প্রস্তাবও না-পসন্দ ছিল তাঁদের। পাশাপাশি, আরও কিছু মতপার্থক্যের কারণে কংগ্রেসে প্রশান্তের যোগদান সম্ভব হয়নি।
অন্য দিকে, পশ্চিমবঙ্গ দখলের পর মমতাকে জাতীয় রাজনীতির মুখ করতে চেয়েছিলেন পিকে। তাই তৃতীয়বার নীল বাড়ি দখল করার পরেও আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় ছিল তৃণমূলের। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বর মাসে কলকাতা পুর নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে গোলমাল শুরু হয় পিকে ও তৃণমূলের মধ্যে। ফেব্রুয়ারি মাসের পুর নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা নিয়ে সেই কোন্দল চরমে ওঠে। এক সময় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, প্রশান্তের সঙ্গে নিজে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
গত ৮ মার্চ নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের কর্মসূচিতে একই মঞ্চে মমতার সঙ্গে দেখা যায় প্রশান্তকে। সেদিনই মমতা জানিয়েছিলেন, পিকে থাকছেন তাঁর সঙ্গেই। কংগ্রেস দিল্লিতে পিকেকে ফিরিয়ে দিলেও, তিনি যে প্রশান্তের পাশেই আছেন, সেই বার্তা দিতেই জাতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে পিকেসম্পর্কে তাঁর অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। সূত্রের খবর, দিল্লিতে পৌঁছেই মমতার সঙ্গে কথা হয়েছে পিকের। আর তার পরেই রাজধানীতে ভোটকুশলী হিসেবে তাঁকে রেখে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী।