Prashant Kishor

ভোটে নেতা জেতেন আর দলই জেতে, মানুষ নয়, হঠাৎ কেন এমন বললেন পিকে?

তৃণমূলের পরামর্শদাতা হিসেবে রাজ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনে চর্চায় ছিলেন পিকে। ভোটের পর অবশ্য ‘পরামর্শদাতা’র কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৫৫
Share:

ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। ফাইল চিত্র।

নেতা আর তাঁর দলকে ভোটে জেতানোর ‘সাফল্যের শংসাপত্র’ ছিল তাঁর পকেটে। এখন সেই তিনিই কিছুটা হতাশ। তাঁর উপলব্ধি, ‘ভোটে নেতা আর দলই জেতেন। মানুষ জেতে না।’ সেই সঙ্গেই রাজনীতিতে নিজের ভূমিকা স্পষ্ট করে নতুন ভূমিকার কথা জানিয়ে দিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)।

Advertisement

তৃণমূলের পরামর্শদাতা হিসেবে রাজ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনে চর্চায় ছিলেন পিকে। ভোটের পর অবশ্য ‘পরামর্শদাতা’র কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে তাঁর তৈরি পরামর্শদাতা সংস্থা ‘আইপ্যাকে’র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। এ বার গত দশ বছর ধরে সেই হাই প্রোফাইল কর্মজীবনের মূল্যায়ন সামনে এনে আইপ্যাকের প্রাক্তন প্রধান পিকে বলেছেন, ‘‘দশ বছরে অনেক বড় বড় নেতা, দলের সঙ্গে কাজ করে দেখেছি, নেতা ও দল জেতে (ভোটে)। কিন্তু মানুষ জেতে না।’’

সেই পিকে-র একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে তাঁর সমর্থক-প্রচারক ফেসবুক পেজ ‘বাত বিহার কী।’ সাদা কুর্তার সঙ্গে সাদা উত্তরীয় গলায় জড়িয়ে সেই ভিডিয়োয় আঞ্চলিক হিন্দিতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘যে জেতে সে চলে যায়। মানুষ পড়ে থাকে তাঁর নিজের জায়গায়।’’

Advertisement

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ধাক্কা সামলাতে এ রাজ্যে প্রশান্তের পরামর্শেই শাসক তৃণমূল ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। দলের একাংশ স্বীকার করেন, সেই কর্মসূচি তৃণমূলকে ঘুরে দাঁড়াতে অনেকটাই সাহায্য করেছিল। শুধু তাই নয়, যে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে তৃণমূল সাফল্য দাবি করে, অনেকের মতে, তা-ও তাঁর বুদ্ধি। তৃণমূল ছাড়াও, বিহার, মাহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশেও স্থানীয় দলগুলিকে নানা সময় পরামর্শ দিয়েছে প্রশান্ত। মাস কয়েক আগে কংগ্রেসের সঙ্গেও কথাবার্তা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু তা অবশ্য বেশি দূর এগোয়নি।

জনস্বাস্থ্যে পড়াশোনা করে কর্মজীবন শুরু করলেও ২০১১ সালে রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় পিকে-র। গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা হিসেবে পা রাখেন তিনি। তার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সরকার তো বটেই মোদীর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হয়ে ওঠেন তিনি। তার পর দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রথমসারির রাজনৈতিক দলগুলির পরামর্শদাতার কাজ নেন তিনি। সেই সূত্রেই গত লোকসভা নির্বাচনের পরে তিনি দায়িত্ব নেন তৃণমূলের।

রাজনৈতিক দল নিয়ে হতাশা থাকলেও রাজনীতি থেকে সরে যাননি তিনি। বেশ কিছু দিন আগেই ‘জন সূরজ’ নামে সংগঠন তৈরি করে বিহারের গ্রামে ঘুরছেন তিনি। ওই ভিডিয়োতে নিজের ইচ্ছা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘‘ভগবান যদি আমাকেই তেমন শক্তি আর বুদ্ধি দিয়ে থাকেন, তা দিয়ে মানুষের জীবনে বদল আনতে কিছু করতে হবে।’’ ভিডিয়োর এই বক্তব্য সম্পর্কে জানতে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পিকে ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে টেক্সট মেসেজের জবাবও দেননি পিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement