নীতীশ কুমার (বাঁ দিকে), প্রশান্ত কিশোর (ডান দিকে)। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ইন্ডিয়া ব্লক ছেড়ে নীতীশের এনডিএতে ফেরার দিনই বিহারে জেডিইউ-বিজেপি জোটকে নিয়ে বড় দাবি করলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। রবিবার সকালে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন নীতীশ। বিকেলে বিজেপির সমর্থন নিয়ে আবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন তিনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিহারে পুনর্গঠিত এনডিএর ভবিষ্যৎ নিয়ে কটাক্ষ করলেন পিকে। দাবি করলেন, বিহারে আগামী বিধানসভা পর্যন্ত টিকবে না নীতীশ-বিজেপি জোট! কেন তিনি এ কথা বলছেন, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
রবিবার যখন পটনায় রাজনৈতিক ডামাডোল তুঙ্গে উঠেছে, তখন বেগুসরাই থেকে বিহারে পুনর্গঠিত এনডিএর ‘ভবিষ্যৎ’ স্থির করে দিলেন পিকে। তাঁর দাবি, ২০২৫ সালে বিহার বিধানসভার ভোট পর্যন্তও টিকবে না নয়া জোট। এর অর্থ হল, বছরখানেকেরও কম সময় স্থায়ী হবে বিজেপি-জেডিইউ জোট। তিনি বলেন, ‘‘এখন যে জোট রয়েছে, যেখানে নীতীশ কুমার বিজেপির সমর্থনে এন়ডিএর মুখ হয়ে উঠেছেন, তা বিহার বিধানসভা ভোট পর্যন্তও টিকবে না। লোকসভা ভোট শেষ হওয়ার ছ’মাসের মধ্যে এটা হয়ে যাবে। আমি এ কথা লিখে দিতে পারি।’’
প্রশান্ত বলেন, ‘‘নতুন করে নীতীশ বিজেপির হাত ধরেছেন। এর একমাত্র কারণ, তিনি বুঝতে পারছিলেন, মহাগঠবন্ধনে থেকে লোকসভা ভোটে একটি আসনও জিততে পারবেন না। তাই এনডিএতে ঢুকে মোদী, বিজেপির নামে যদি কিছু আসন জেতা যায়। সেটা হয়তো হবে-ও। কিন্তু একটা কথা আমি আজ বলে দিচ্ছি, ২০২৫ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে এই নতুন জোটের সবচেয়ে বড় মূল্য চোকাতে হবে বিজেপিকে। লিখে নিন। ফল বেরনোর পর মিলিয়ে নেবেন।’’
তবে, শুধু নীতীশই নয়, ডিগবাজিতে ওস্তাদ হিসাবে বিহারের সমস্ত রাজনৈতিক দলকেই বিঁধেছেন পিকে। তিনি বলেন, ‘‘নীতীশ কুমার যে ডিগবাজি খেতে ওস্তাদ তা বিহারের মানুষের জানতে বাকি নেই। কিন্তু আজকের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, শুধু নীতীশই নয়, মোদী, অমিত শাহ এবং বিজেপিও অনায়াসে ডিগবাজি খেতে পারেন। এমনকি যে আরজেডি আজ সকাল (রবিবার) পর্যন্ত নীতীশকে বিহারের জন্য সেরা লোক বলে দাবি করছিল, তারাই সূর্য ডোবার আগে সেই নীতীশকে ‘কুশাসন বাবু’ নামে ডাকা শুরু করবে। বিহারের মানুষ কিছুই বুঝতে পারছেন না, যদি এটা ভেবে থাকেন, তাহলে বড় ভুল করবেন।’’
প্রসঙ্গত, রবিবারই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন নীতীশ। বিকেলে বিজেপির সমর্থন নিয়ে আবারও মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন তিনি। ‘মহাগঠবন্ধন’ ভাঙার কারণ হিসাবে রবিবার সকালে নীতীশ জানিয়েছিলেন, সেখানে নাকি কাজ করার পরিস্থিতি ছিল না। তাই আরজেডির সমর্থনে সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। কিন্তু ভোট কুশলী প্রশান্তের দাবি, নীতীশের বিজেপির হাত ধরে তৈরি পুনর্গঠিত এনডিএ জোটের আয়ু আগামী বিধানসভা ভোট পর্যন্তও নয়। এমনকি লোকসভা ভোটের ছ’মাসের মধ্যেই এই জোট ভেঙে যাবে বলেও দাবি তাঁর।