প্রশান্ত কিশোর।
প্রশান্ত বলেন, ‘‘আমার কোনও রাজনৈতিক ঐতিহ্য নেই। আমি কোনও রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য নয়। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী। কোনও বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে আমার রেষারেষিও নেই। আমি বিহারের ভাল চাই। তার জন্য আমার যে রণকৌশল তা আমি সবাইকে জানিয়েছি।’’
‘‘ভোট আমার লক্ষ্য নয়। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে পদযাত্রা শুরু করছি না আমি’’ বললেন প্রশান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘ভোটে জিততে হলে তার কৌশল আমার জানা আছে, সেটা করতে হলে আমি মানুষের সঙ্গে কথা বলার প্রয়াস করতাম না। ভোটে জেতার জন্য যা করা দরকার সেটুকুই করতাম।’’
প্রশান্ত জানিয়ে দিলেন, যদি রাজনৈতিক দল হয়ও তবে তিনি সেই দলের সর্বেসর্বা হবেন না। শুধু সদস্য হবেন।
বিহারের সামাজিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ২০ হাজার ওয়াকিবহাল মানুষের সঙ্গে আগামী ৩ মাস ধরে কথা বলবেন প্রশান্ত। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার জন্য, বিহারের মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য বিহারজুড়ে তিন হাজার কিলোমিটার রাস্তা ব্যক্তিগত পদযাত্রা করবেন তিনি। প্রশান্ত জানালেন, এঁরা যদি তাঁর ‘জন সূরয’-এর ভাবনার সঙ্গে সহমত হন এবং মনে করেন এই লক্ষ্যে পৌঁছনেরা জন্য একটি রাজনৈতিক দল গড়া দরকার। তবে রাজনৈতিক দল হবে। প্রশান্তের আশা, অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। তার পর যদি রাজনৈতিক দল তৈরি হয়, তবে তিনিও সেই দলের একজন সদস্য হবেন।
টুইটে ‘জন সূরয’-এর কথা বলেছিলেন প্রশান্ত। যার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘জনতার জন্য সুশাসন।’ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন ‘জন সূরয’ একটি ভাবনা। কোনও রাজনৈতিক দল নয়। ‘জন সূরয’ বিহারের মানুষের উন্নতির কথা বলবে। বিহারের মানুষের অধিকারের কথা বলবে। বিহারকে দেশের প্রথম দশ রাজ্যের মধ্যে নিয়ে আসার কথা ভাববে। সেই লক্ষ্যে কাজ করবে।
এক বছর ভেবে ঠিক করেছি, আমি বিহারে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করব। বাংলার ভোটের ফল প্রকাশের পরই আমি বলেছিলাম ভোটকুশলী হিসেবে আর কাজ করব না।
প্রশান্ত কিশোর বললেন, কংগ্রেস আমার পরামর্শ নিতে চেয়েছিল তার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে যে সমাধানের উপায় আমি বলেছিলাম,তাতে ওঁরা সহমত হননি। আমি বলেছিলাম কংগ্রেস সভানেত্রীর নেতৃত্বে একজন এক্সিকিউটিভ নিয়োগ করা দরকার। যিনি এই সমস্যার সমাধান করবেন। কিন্তু ওঁরা তা মনে করেননি। তাই আমি সরে এসেছি।
বিহার জুড়ে তিন হাজার কিলোমিটার পথে পায়ে হেঁটে ঘুরবেন প্রশান্ত কিশোর। বললেন, ‘‘আগামী তিন-চার মাসে ১৭ থেকে ১৮ হাজার মানুষের সঙ্গে কথা বলা হবে সেই পদযাত্রায়। তাঁরা যদি মনে করেন, তবেই রাজনৈতিক দল তৈরি হবে। তবে সেই দল যদি তৈরিও হয় তবে তাঁর সর্বেসর্বা আমি হব না।’’
প্রশান্ত জানালেন, আমার নিজস্ব রাজনৈতিক দল বলে কিছু হবে না। মানুষ যদি আমার লক্ষ্যের সঙ্গে একমত হয়, তাঁরা যদি মনে করেন তবে রাজনৈতিক সংগঠন হবে, তবে হবে। আশা করছি, অগস্ট কিংবা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তা বুঝে ফেলা যাবে।
প্রশান্ত কিশোর জানালেন, আমি আজ কোনও রাজনৈতিক দলের ঘোষণা করব না
পটনায় সাংবাদিক বৈঠকে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। বলছেন, বিহারকে এখন দেশের পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলির মধ্যে একটি মনে করা হয়।
এর পরই প্রশান্তের টুইট তাঁর নতুন রাজনৈতিক দলের জল্পনা বাড়িয়ে দেয়।
দিন কয়েক আগে কংগ্রেসের সঙ্গেও আলাপ আলোচনা চলছিল পিকে-র। কংগ্রেসর সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকও করেন। রাজনৈতিক মহল ভেবেছিল এ বার হয়তো ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের ভোট বৈতরণী পার করার দায়িত্ব নেবেন প্রশান্ত। কিন্তু সনিয়ার সঙ্গে সৈই বৈঠক শেষপর্যন্ত সফল হয়নি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, পিকে সম্ভবত কংগ্রেসে কিছুটা নিয়ন্ত্রণও চেয়েছিলেন। যা হয়তো তাঁকে দিতে রাজি হননি সনিয়া। অবশ্য এই দাবির কোনও সমর্থন কংগ্রেস বা পিকে বা আইপ্যাকের কাছে পাওয়া যায়নি।