প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে নিজের লেখা বই তুলে দিচ্ছেন প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। ছবি: এক্স থেকে।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় বই লিখেছেন। গত ডিসেম্বরে তা প্রকাশিতও হয়েছে। সোমবার পৌষ সংক্রান্তির দুপুরে সেই বই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে গিয়ে তাঁর হাতে তুলে দিলেন শর্মিষ্ঠা। যে ফ্রেম দেখার পর রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে এই ফ্রেম কি অন্য কোনও ইঙ্গিত? যদিও সে ব্যাপারে কোনো তরফেই স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।
প্রণবের ডায়েরি লেখার অভ্যেস ছিল। সেগুলি তিনি মেয়ে ‘মুন্নি’র কাছেই দিয়ে গিয়েছেন। তা থেকেই বই লিখেছেন শর্মিষ্ঠা ওরফে মুন্নি। যে বইয়ের নাম—‘প্রণব মাই ফাদার: আ ডটার রিমেম্বার্স’। তাতে নানাবিধ প্রসঙ্গের অবতারণা রয়েছে। এমনকি, মোদী নিয়েও প্রবণবের ‘নরম মনোভাব’-এর কথা বইয়ে উল্লিখিত রয়েছে বলে খবর। সেই বই মোদীর হাতে গিয়ে তুলে দিলেন প্রণব-কন্যা।
প্রকাশের আগেই শর্মিষ্ঠার বই নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। মেয়ের লেখা বইয়ে রয়েছে রাহুল গান্ধী সম্পর্কে প্রণবের নানাবিধ বিরক্তির কথাও। এমনকি, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্য প্রণব তাঁর ডায়েরিতে সনিয়া গান্ধী ও মনমোহন সিংহকেই পরোক্ষে দায়ী করেছিলেন বলে শোনা যায়। যদিও সে সব নিয়ে কংগ্রেস কোনও কালেই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সঙ্গে প্রণব যে সব হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মিলিয়েছিলেন তেমন নয়। শোনা যায়, রাষ্ট্রপতি প্রণবকে ইজ়রায়েল সফরে যাওয়ার কথা বলেছিল সরকার। কিন্তু ভারতের বিদেশ-নীতির ভারসাম্য রক্ষার ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাইসিনা হিলস স্পষ্ট জানিয়েছিল, রাষ্ট্রপতি হিসেবে সফর করলে প্রণব ইজ়রায়েল, প্যালেস্টাইন দুই দেশেই যাবেন। না হলে একটি দেশে যাবেন না। শেষ পর্যন্ত তেল আভিভের পাশাপাশি প্যালেস্টাইনেও গিয়েছিলেন প্রণব। তবে মেয়ে শর্মিষ্ঠা লিখেছেন, মোদী সম্পর্কে তাঁর বাবার মনোভাব ‘নরম’ ছিল। ২০১৮ সালের ৭ জুন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বার্ষিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন প্রণব। যা নিয়ে নানাবিধ আলোচনা হয়েছিল জাতীয় রাজনীতিতে। প্রসঙ্গত, শর্মিষ্ঠাও এক সময়ে কংগ্রেস করতেন। ছিলেন দিল্লি কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্রও। তবে বেশ কিছু দিন হল সে সব পাট চুকিয়ে দিয়েছেন তিনি। সেই প্রেক্ষাপটে সোমবার শর্মিষ্ঠার প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়া এবং তাঁর হাতে বই তুলে দেওয়ার ফ্রেমকে যতই অনেকে ‘সৌজন্য’ হিসেবে দেখাক, রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল থাকছেই।