প্রতীকী চিত্র।
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় এখনও রয়েছে চিনা সেনা। কোভিড-কূটনীতির দৌড়ে ভারতকে পিছনে ফেলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে ঝাঁপিয়েছে চিন। এই পরিস্থিতিতে আজ ভিডিয়ো মাধ্যমে বসল ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত (ভারত, চিন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) দেশগুলির বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক।
ব্রিকসের বৈঠকের পরে একটি দীর্ঘ যৌথ বিবৃতি প্রকাশ হয়েছে। তাতে গুরুত্ব পেয়েছে কোভিড মোকাবিলা এবং প্রতিষেধকের সুষম বণ্টন এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকগুলি। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও এই সম্মেলনের আয়োজন করার জন্য নয়াদিল্লির প্রশংসা করে বলেছেন, এই বিপদের মধ্যে সব রকম ভাবে নয়াদিল্লির পাশে রয়েছে বেজিং। যৌথ বিবৃতিতেও বহুপাক্ষিক গোষ্ঠীর আবশ্যক শর্তকে মেনে প্রত্যেকের সুরে সুর মিলিয়েছেন ওয়াং ই। তবে কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, গত দেড় বছরের অভিজ্ঞতার পর চিনের কোনও বক্তব্যকেই এক চিমটে নুন না-দিয়ে গ্রহণ করতে পারছে না সাউথ ব্লক। বিশেষজ্ঞদের মতে, বহুপাক্ষিক যে কোনও গোষ্ঠীতে এ রকম কথা বলে দ্বিপাক্ষিক স্তরে ভিন্ন আচরণ করতে বহু বার দেখা গিয়েছে চিনা প্রশাসন এবং তাদের সেনাকে। আজ আন্তর্জাতিক স্তরে কিছুটা মুখ পুড়েছে বেজিংয়ের। রাজনৈতিক চাপেও রয়েছে তারা। ফলে ব্রিকস মঞ্চকে ব্যবহার করে নিজেদের ভাবমূর্তি মেরামতের চেষ্টা করে গিয়েছে চিন।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক ইতিহাসে কোভিড যে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ, সে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন প্রত্যেক বিদেশমন্ত্রী। এর ফলে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। যা আমাদের আবারও বুঝিয়ে দিচ্ছে, একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকা আজকের বিশ্বে বহুপাক্ষিকতা শুধু যুদ্ধ বা শান্তির কারণে তৈরি হওয়া কোনও অস্ত্র নয়, মানুষের প্রত্যেক দিনের ভাল থাকা এবং এই গ্রহের স্থায়ী ভবিষ্যতের জন্য জরুরি। মন্ত্রীরা সহমত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একজোট হলে তবেই ভবিষ্যতে অতিমারির মোকাবিলা করা যাবে’।
বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে অতিমারি নিয়ে আলোচনার পর ‘ব্রিকস ভ্যাকসিন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ দ্রুত তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। প্রতিষেধকের পাশাপাশি, বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম যাতে প্রত্যেকটি দেশ সহজেই কম মূল্যে পেতে পারে, তার জন্য চেষ্টা করতে চান ব্রিকসভূক্ত দেশের মন্ত্রীরা। কোভিড প্রতিষেধকের উপর থেকে মেধাস্বত্ব তুলে দেওয়া নিয়েও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে আবেদন করা হবে ব্রিকস-এর তরফে।