রাজস্থানে গুজ্জর ভোট টানতে মাঠে নেমে পড়ল বিজেপি এবং কংগ্রেস। প্রতীকী ছবি।
চলতি বছরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে রাজস্থানে গুজ্জর ভোট টানতে মাঠে নেমে পড়ল বিজেপি এবং কংগ্রেস।
আজ ছিল গুজ্জর সমাজের নেতা তথা লৌকিক ভগবান দেব নারায়ণের জন্মদিন। গুজ্জরদের ভোট নিশ্চিত করতে আজ রাজ্যে ছুটি ঘোষণা করে রাজ্যের অশোক গহলৌত সরকার। পাল্টা পদক্ষেপে গুজ্জর সমাজের মন জয়ে দেব নারায়ণের জন্মদিন পালনে রাজ্যের ভিলওয়াড়ার মালাসেরি পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দেব নারায়ণের পুজো করে গুজ্জর অধ্যুষিত ওই এলাকায় সামাজিক অসাম্যের বিরুদ্ধে দেবনারায়ণের ভূমিকা স্মরণ করেন মোদী। রাজনীতির অনেকের মতে, রাজস্থানের গুজ্জর ভোটকে পদ্মশিবিরের ছাতার তলায় আনতে মাঠে নেমে পড়লেন নরেন্দ্র মোদী। আজ যে ভাবে ভীলওয়াড়ায় স্থানীয় গুজ্জর সমাজ মোদীর সমর্থনে ভিড় জমিয়েছিলেন, তা দেখে রীতিমতো অস্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এ বছরের শেষে রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজস্থানের মতো বড় রাজ্য জয়ে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যের ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৭-৮ শতাংশ গুজ্জর ভোটার। রাজস্থানের ৩৩টি জেলার মধ্যে ১৪টি জেলায় গুজ্জরদের প্রভাব রয়েছে। রাজ্যের ১২টি লোকসভা ও অন্তত পঞ্চাশের কাছাকাছি বিধানসভা আসনে গুজ্জররা নির্ণায়ক শক্তি। এ ছাড়া আরও অন্তত দশটি আসনে গুজ্জররা ভোটের ফলে প্রভাব ফেলতে সক্ষম। তাই দু’শো আসনের বিধানসভায় গোড়া থেকেই গুজ্জরদের সমর্থন কুড়িয়ে নিয়ে এক-চতুর্থাংশ আসন নিশ্চিত করে এগোতে চাইছে উভয় পক্ষই। কিন্তু কংগ্রেসে সচিন পাইলট-অশোক গহলৌতের দ্বন্দ্ব থাকায় গুজ্জর ভোট পাওয়ার প্রশ্নে সন্দেহ রয়েছে খোদ কংগ্রেস শিবিরেই।
অথচ, পাঁচ বছর আগের বিধানসভা নির্বাচনে গুজ্জর সমাজ ধরে নিয়েছিল, কংগ্রেস জিতলে দলের মুখ্যমন্ত্রী হবেন সচিন পাইলট। ফলে গুজ্জর সমাজের গোটা ভোটই দখল করতে পেরেছিল রাহুল গান্ধীর দল। সচিন জেতেন। জেতে কংগ্রেসও। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হন অশৌক গহলৌত। হেরে যান বিজেপির ৯ জন গুজ্জর প্রার্থী। কিন্তু সচিনকে মুখ্যমন্ত্রী না করায় তাঁরা যে হতাশ, তা চেপে রাখেননি গুজ্জর নেতারা। এ বারে তাই নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগে থেকেই গুজ্জরদের সেই বঞ্চনার ইতিহাস মনে করিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন মোদী। ডাক দিয়েছেন গুজ্জরদের অধিকার বুঝে নেওয়ার। তাই আজ প্রধানমন্ত্রীর সফর বিজেপি যতই অরাজনৈতিক বলে দাবি করুক না কেন, বিরোধী কংগ্রেস তা মানতে নারাজ। তাঁরা এই সফরকে ভোটের প্রস্তুতি সফর হিসাবে ব্যাখ্যা করেছে।
কংগ্রেসের রাজস্থানের প্রদেশ সচিব ধীরজ গুজ্জর বলেন, ‘‘যে ভাবে গুজ্জর সমাজকে পাশে পাওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদী ডাক দিয়েছেন, তা কেবল ভোটের সময়েই রাজনৈতিক দলগুলি করে থাকে। বোঝা যাচ্ছে, আজ থেকেই ভোট প্রচার শুরু করে দিলেন মোদী।’’