ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল না স্পিকার, রাজ্য বিধানসভায় কার অধিকার কতটা?
এই ধোঁয়াশার মধ্যে বারবার হস্তক্ষেপ করেছে শীর্ষ আদালত। মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক লড়াইও এ বারে প্রত্যাশামাফিক গড়াল সুপ্রিম কোর্টে। করোনাভাইরাসের আশঙ্কাকে সামনে রেখে আজ বিধানসভায় রাজ্যপালের বক্তৃতার পরেই ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিধানসভা মুলতুবি করে দিলেন স্পিকার। রাজ্যপালের ‘নির্দেশ’ সত্ত্বেও আজ আস্থা ভোট না করে। আর তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই স্পিকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান।
আগামিকাল বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এর শুনানি। যদিও তার আগে রাজ্যপাল লালজি টন্ডন ফের কমল নাথকে চিঠি লিখে আগামিকাল আস্থা ভোট করতে বলেছেন। তিক্ততা কাটাতে কমল নাথ রাতে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান।
বিজেপির এক আইনজীবী নেতা বলেন, ‘‘সম্প্রতি মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, উত্তরাখণ্ডের মতো নানা রাজ্যে ঠিক একই ধরনের সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট স্পিকারকে নির্দেশ দিয়েছে আস্থা ভোট করানোর জন্য। সাম্প্রতিক অতীতে এই ধরনের রায় বিজেপির বিরুদ্ধেই গিয়েছে। এ বারে কংগ্রেসকে এর খেসারত দিয়ে আস্থা ভোট করতে হবে।’’ কমল নাথের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘বিজেপি কেন অনাস্থা প্রস্তাব আনছে না? আমি কেন আস্থা ভোট করব? আর বেঙ্গালুরুতে এখনও ১৬ বিধায়ককে আটকে রাখা হয়েছে। তাঁদের না ছাড়লে কী করে ভোট হয়? তাঁদের সামনে আনলেই সব স্পষ্ট হবে।’’ রাতে রাজভবন থেকে বেরিয়েও একই কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই যুক্তিতেই গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যপালের সঙ্গে বিবাদ চলছে। দু’দিন আগে রাজ্যপাল কমল নাথকে চিঠি লিখে আজ আস্থা ভোট করতে বলেন। গত কাল রাতে কমল নাথকে ডেকেও পাঠান। আজ সকালে রাজ্যপালকে পাল্টা চিঠি লিখে কমল নাথ জানান, বেঙ্গালুরু থেকে বিধায়কেরা না এলে আস্থা ভোট হবে না। বাজেট অধিবেশনের গোড়ার দিন রাজ্যপাল এক মিনিটে বক্তৃতা শেষ করেন। তারপর নিজের মতো ‘উপদেশ’ দিয়ে বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে যান। কমল নাথ এ পদক্ষেপ করবেন, সেটি আঁচ করেই গত কাল সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার সঙ্গে দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন শিবরাজ, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ারা। আজ আস্থা ভোট না হতেই সুপ্রিম কোর্টে যায় বিজেপি।
কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সম্ভবত আগামিকাল স্পিকারের আইনজীবী হিসেবে শীর্ষ আদালতে সওয়াল করবেন। রাজ্যপাল ও স্পিকারের পক্ষে তিনিই গত কয়েকটি মামলায় বিজেপিকে বেগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ঘরোয়া মহলে কংগ্রেসের আইনজীবীরা মানছেন, এ বারেও আস্থা ভোট এড়ানো কঠিন হবে। তবে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নির্ভর করছে বেঙ্গালুরুতে ‘বন্দি’ বিধায়কদের উপরে। তাঁরা না এলে বিপদ। এসে স্পিকারের কাছে ইস্তফা দিলেও বিপদ। সে কারণে আজই শিবরাজ বিজেপির বিধায়কদের রাজ্যপালের সামনে নিয়ে হাজির করেন।