National News

অপসারিত শশী, ‘চিরন্তন’ নেত্রী আম্মা

রাজনৈতিক ‘মাস্টারস্ট্রোক’ দিলেন পনীরসেলভম, পলানীস্বামী। এআইএডিএমকে সাধারণ পরিষদের বৈঠকে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিলেন, এখন থেকে দলের ‘চিরন্তন সাধারণ সম্পাদক’ জয়ললিতা। ফলে ওই পদ থেকে অপসারিত হলেন শশিকলা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৩:২০
Share:

শশীকে সরাতে আম্মা শরণে পলানীস্বামী ও পনীরসেলভম। ছবি: পিটিআই।

দলের ‘চিরন্তন সাধারণ সম্পাদক’ জয়রাম জয়ললিতা। ওই পদে আর কেউ বসবেন না। মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদের বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নিল তামিলনাড়ুর শাসক দল এআইএডিএমকে। আর এই সিদ্ধান্তের ফলে এআইএডিএমকে-র শীর্ষপদ থেকে অপসারিত হয়ে গেলেন শশিকলা নটরাজন। সাধারণ পরিষদের বৈঠকে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত বৈধ কি না, তা অবশ্য মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচার্য। কিন্তু জয়ললিতার সম্মানে যে ভাবে শূন্য রাখা হল দলের শীর্ষপদ, তাতে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা শশিকলা তথা দিনকরণ শিবিরের পক্ষে খুব কঠিন হয়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Advertisement

এআইএডিএমকে-র এই বৈঠককে মান্যতা দিতে রাজি নয় শশিকলা শিবির। দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে যাওয়ার আগে শশিকলা যাঁকে দলের উপ-সাধারণ সম্পাদক পদে বসিয়ে গিয়েছিলেন, সেই টি টি ভি দিনকরণ মঙ্গলবারের সাধারণ পরিষদ বৈঠক আটকানোর খুব চেষ্টা করেছিলেন। দিনকরণ অনুগামীরা মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বৈঠকে স্থগিতাদেশ জারির আর্জি জানান। কিন্তু হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হয়নি। ফলে চেন্নাইতে প্রায় ২০০০ প্রতিনিধিকে নিয়ে এ দিন সকালে বৈঠকে বসেন পলানীস্বামী, পনীরসেলভমরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দলের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রয়াত নেত্রী জয়ললিতার সম্মানে চিরকাল শূন্য থাকবে। ওই পদে জয়ললিতা রয়েছেন বলেই ধরে নেওয়া হবে। অতএব সাধারণ সম্পাদক পদে শশিকলা আর থাকছেন না।

পনীরসেলভম এবং পলানীস্বামী হাত মিলিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিলেন, তাতে শশিকলারা বেশ বেকায়দায় পড়লেন বলে মনে করছে চেন্নাইয়ের রাজনৈতিক শিবির। ছবি: পিটিআই।

Advertisement

জয়ার মৃত্যুর কিছু দিনের মধ্যেই তাঁর উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিবাদে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিল এআইএডিএমকে। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভম পরে হাত মিলিয়েছেন, ফলে দুই বিবদমান শিবিরের পুনর্মিলন হয়েছে। এই পুনর্মিলনের আগে পনীরসেলভমরা শর্ত দিয়েছিলেন, দলের শীর্ষপদ থেকে এবং দল থেকে শশিকলাকে সরাতে হবে। এ দিনের সাধারণ পরিষদ বৈঠকে সেই শর্তই পূরণ করার চেষ্টা হল। সরকারের শীর্ষে পলানী এবং দলের শীর্ষে পনীর— এই ফর্মুলাও ছিল পুনর্মিলনের অন্যতম শর্ত। সেই শর্ত মেনে এ দিন এআইএডিএমকে স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান পদে পনীরসেলভমের নিয়োগে সিলমোহর দিয়েছে সাধারণ পরিষদ।

আরও পড়ুন: বিবেক-বক্তৃতা জুড়ে বারবার শুধু বাংলা

আরও পড়ুন: ধর্মগুরুর নির্দেশে বন্‌ধে অনড় গুরুঙ্গ

এআইএডিএমকে সাধারণ পরিষদের সভায় যে সিদ্ধান্ত হল, তা আইনত বৈধ কি না, মাদ্রাজ হাইকোর্ট তা খতিয়ে দেখবে। কিন্তু পনীর-পলানী হাত মিলিয়ে রাজনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। পনীর-পলানী বনাম শশিকলা-দিনকরণদের বিবাদে এআইএডিএমকে-র সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা যে দিকেই থাকুন, ‘আম্মা’ আবেগে সবাই কিন্তু এক ছাতার তলায়। সেই ‘আম্মা’কে (জয়ললিতা) দলের চিরন্তন সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে কর্মী-সমর্থকদের আবেগও উস্কে দিলেন পনীর-পলানী। শশিকলাকে সরিয়ে অন্য কাউকে সাধারণ সম্পাদক পদে বসানো হলে দিনকরণরা সে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জোর আইনি লড়াই শুরু করে দিতেন। কিন্তু চিরন্তন সাধারণ সম্পাদক যখন জয়ললিতা, তখন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা শশিকলা-দিনকরণদের পক্ষে খুব কঠিন হয়ে গেল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement