রাজনৈতিক বিতর্কের তালিকায় এ বার যুক্ত হল আদা শর্মা অভিনীত ‘দ্য কেরল স্টোরি’। ছবি: সংগৃহীত।
সিনেমা মুক্তির আগে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরির চল সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার দেখা গিয়েছে। ‘পদ্মাবতী’র ক্ষেত্রে তা দেখা গিয়েছে। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল আদা শর্মা অভিনীত ‘দ্য কেরল স্টোরি’। টুইটারে এই নিয়ে নানা স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। সিনেমার ট্রেলরে দাবি করা হয়েছে, কেরলের ৩২ হাজার মহিলা নিখোঁজ। পরে তারা জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দেয়। সেই দাবি ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। ছবি নির্মাতাদের এই দাবির বিরোধিতা করে এ বার মুখ খুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরও। তিনি টুইট করে লিখেছেন, “এ আপনাদের কেরল স্টোরি হতে পারে, আমাদের নয়।”
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও এই সিনেমা তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ধর্মনিরপেক্ষ এই রাজ্যকে সন্ত্রাসবাদের রাজধানী হিসাবে তুলে ধরাই সিনেমা নির্মাতাদের আসল উদ্দেশ্য। এর পিছনে রয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি। সিনেমায় লাভ জেহাদও তুলে ধরা হয়েছে বলে বিজয়নের দাবি। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষণ রেড্ডি এর আগেই সংসদে জানিয়েছিলেন, কেরলে লাভ জেহাদের অভিযোগ সত্য নয়। তা সত্ত্বেও দক্ষিণী এই রাজ্যকে বিশ্বের দরবারে বদনাম করার উদ্দেশেই সিনেমায় বিষয়টিকে অন্য আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে বলে মনে করেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। বিজয়নের অভিযোগ, সঙ্ঘ পরিবার কেরলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্টের চেষ্টা করছে।
এর আগে কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস নেতা ভি ডি সতীশন দাবি তুলেছিলেন, এই সিনেমার মুক্তি আটকে দেওয়া হোক। নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “দ্য কেরল স্টোরি নামে সিনেমায় ৩২ হাজার মহিলার ধর্মান্তরণ এবং পরে তাঁদের আইএসে যোগ দেওয়ার তথ্য সম্পূর্ণ ভুল। এই ছবি প্রদর্শনের অনুমতি যেন দেওয়া না হয়। ট্রেলর দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এই সিনেমা তৈরির উদ্দেশ্য কী।” এর পাশাপাশিই সতীশনও সঙ্ঘ পরিবারকে নিশানা করে অভিযোগ করেছিলেন, সঙ্ঘ পরিবারের উদ্দেশ্য পূরণ এবং সামাজিক বিভেদ তৈরির জন্যই সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছে। সংখ্যালঘু সমাজের উপরে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরির অভিযোগও এনেছেন সতীশন। একে নিছক বাক্স্বাধীনতা বলতে নারাজ কেরলের বিরোধী দলনেতা।
প্রসঙ্গত সুদীপ্ত সেন পরিচালিত দ্য কেরল স্টোরি মুক্তি পাচ্ছে আর কয়েক দিন পরেই। সিনেমা বিশেষজ্ঞদের মতে, মুক্তির আগে বিতর্কের হাওয়া তুলে দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে টেনে নিয়ে যাওয়া বাণিজ্যিক কৌশলেরই অঙ্গ। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু সিনেমার লক্ষীলাভ নয়, রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির বিষয়টিও জড়িয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পণ্ডিতেরা।