মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটেের দেওয়ালে লেখা আছে এমনই অদ্ভুত সংখ্যা (বাম দিকে)। সঙ্গিনীকে খুনে অভিযুক্ত মনোজ সাহানি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুম্বইয়ে একত্রবাসের সঙ্গী (লিভ-ইন পার্টনার) সরস্বতী বৈদ্যকে খুন করার পর তাঁর দেহাংশ ৩টি বালতির মধ্যে ভরে রেখেছিলেন অভিযুক্ত প্রৌঢ় মনোজ সাহানি! মুম্বই পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে মীরা রোডের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাতে গিয়ে রান্নাঘরে ৩টি বালতির সন্ধান পান তদন্তকারীরা। বালতির ভিতরে দেহাংশগুলি পাওয়া যায়। সেগুলিকে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য স্থানীয় জেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মুম্বই পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে জানিয়েছেন, খুনের পর ইলেকট্রিক কুঠারের মাধ্যমে সরস্বতীর দেহকে ২০টি টুকরো করেছিলেন মনোজ। যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়, তার জন্য দেহের উপর বিশেষ তেল ছড়িয়ে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। পাশের ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরোনোয় বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশে খবর দিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। পুলিশ সেই গন্ধ অনুসরণ করে যে পচাগলা দেহাংশ খুঁজে পায়, তাতে শুধু সরস্বতীর পায়ের পাতা, আর ছোটখাটো কিছু দেহাংশ ছিল। পরে ফ্ল্যাটের রান্নাঘর থেকে আরও কিছু দেহাংশ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে যে, প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশে বেশ কিছু দেহাংশ প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করে পথকুকুরদের খাইয়ে দিয়েছিল মনোজ।
মুম্বই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জয়ন্ত বজবলে জানিয়েছেন, জেরায় খুনের কথা কবুল করেছেন মনোজ। জানা গিয়েছে, এমনিতে তাঁদের মধ্যে ভাল বোঝাপড়া থাকলেও সম্প্রতি কিছু বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। তারপর কুঠার দিয়ে সরস্বতীকে কুপিয়ে খুন করে তাঁর দেহকে টুকরো টুকরো করেন মনোজ। এই ঘটনা অনেককেই কিছু মাস আগের শ্রদ্ধা ওয়ালকার খুনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। শ্রদ্ধার খুনেও প্রায় একইভাবে তাঁর একত্রবাসের সঙ্গী আফতাব পুণাওয়ালার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল। শ্রদ্ধাকে খুন করে তাঁর দেহকে কয়েকটি টুকরোয় কেটে ফ্রিজারে ঢুকিয়ে রাখা এবং অল্প অল্প করে জঙ্গলে ফেলে আসার অভিযোগ ওঠে আফতাবের বিরুদ্ধে। দিল্লির এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সারা দেশে। সেই শ্রদ্ধাকাণ্ডেরই ছায়া দেখা গেল মুম্বইয়ে।