(বাঁ দিকে) আমন জুন। অনু ওরফে লেডি ডন (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির বার্গার কিং আউটলেটে গত মঙ্গলবারই হত্যা করা হয়েছিল ২৬ বছরের এক যুবককে। রেস্তরাঁর ভিতরে এক তরুণীর সঙ্গে মুখোমুখি বসে থাকা আমন জুনকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল দুই দুষ্কৃতী। তার পর থেকেই ঘটনাস্থলে থাকা ওই তরুণীর খোঁজ করছিল পুলিশ। রবিবার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই তরুণীর সন্ধান মিলেছে। গত বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ঘটনার দু’দিন পরে তাঁকে দেখা গিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের কাটরা রেলস্টেশনে। ওড়নায় মাথা ঢেকে তাঁকে দ্রুত পদক্ষেপে একটি স্যুটকেস নিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় সিসিটিভির আওতা থেকে।
পুলিশ জানতে পেরেছে ওই তরুণীর নাম অনু। তিনি এক জন মহিলা গ্যাংস্টার। তবে নিজের মহলে পরিচিত ‘লেডি ডন’ নামে। দিল্লির কুখ্যাত গ্যাংস্টার হিমাংশু ভাউ, যিনি আমন খুনের দায় নিয়েছেন, তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহযোগী অনু। দীর্ঘ দিন তাঁর গ্যাংয়ের সদস্য হিসাবে দিল্লিতে কাজ করছেন।
প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল আমনকে হত্যার ঘটনায় আততায়ীদের হয়ে কাজ করেছেন এই তরুণী। কারণ, বার্গার কিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ঘটনাটি যখন ঘটে তখন আমনকে ফোনে কিছু দেখাচ্ছিলেন অনু। ঠিক সেই সময়েই অন্যমনস্ক আমনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুই দুষ্কৃতী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৩৮টি গুলি ঝাঁঝরা করে দেয় তাঁর শরীর।
বার্গার কিংয়ের বিলিং কাউন্টারের পিছনে পাওয়া গিয়েছিল আমনের দেহ। যা থেকে স্পষ্ট গুলি লাগার পরেও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি। অন্য দিকে, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই যুবতীর গায়ে একটি আঁচড়ও লাগেনি। তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তার পর থেকেই পুলিশ ওই যুবতীর বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।
পুলিশ জানতে পেরেছে অনুর বাড়ি রোহতকে। তবে দিল্লিতে ভাউয়ের দলে কাজ করেন। ঘনিষ্ঠতার টোপ দিয়ে সেদিন আমনকে তিনিই ডেকে এনেছিলেন বার্গার কিংয়ের রেস্তরাঁয়। শুধু তা-ই নয়, আমনের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর জন্য সমাজমাধ্যমে নিজের একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্টও তৈরি করেছিলেন তিনি।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে হত্যার ঘটনার পরে বার্গার কিং থেকে বেরিয়ে দিল্লির রাজৌরি গার্ডেন মেট্রো স্টেশন থেকে শকুরপুর মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যান তিনি। তার পরে বৃহস্পতিবার তাঁকে দেখা গিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের কাটরা রেলস্টেশনে। পুলিশ জানতে পেরেছে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা সেখান থেকে মুম্বইয়ে যাওয়ার একটি ট্রেন ধরেন অনু তথা ‘লেডি ডন’। তাকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।