Atiq Ahmed

ছদ্মবেশ, অত্যাধুনিক অস্ত্র, ৪২ রাউন্ড গুলি! প্রকাশ্যে এল আসাদ এনকাউন্টারের নেপথ্যকাহিনি

পুলিশ জানিয়েছে, উমেশ হত্যাকাণ্ডের পর আসাদ লখনউতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এর পর সেখান থেকে কানপুর এবং মেরঠ হয়ে দিল্লি পৌঁছন। এরপর তিনি মধ্যপ্রদেশে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৭
Share:

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাঁসির বাবিনা রোডে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে আসাদ এবং গুলামের। ফাইল চিত্র ।

উত্তরপ্রদেশের ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদের পুত্র আসাদ এবং তাঁর সঙ্গী গুলামকে লক্ষ্য করে মোট ৪২ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। আর সেই গুলিতেই তাঁদের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাঁসির বাবিনা রোডে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে আসাদ এবং গুলামের। তার পর থেকেই সরগরম উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি। কিন্তু সেই ‘এনকাউন্টারের’ সূত্রপাত কী ভাবে? কেনই বা পুলিশ গুলি চালাতে ‘বাধ্য’ হল? সে সব প্রশ্নের উত্তর দিল উত্তরপ্রদেশের পুলিশ।

প্রয়াগরাজে উমেশ পাল হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছিলেন আসাদ এবং গুলাম। উমেশ হত্যাকাণ্ডের সময় একটি সিসি ক্যামেরায় ফুটেজে অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাঁদেরকেও। তার পর থেকেই তাঁরা পলাতক ছিলেন। পুলিশের খাতায় ‘ওয়ান্টেড’ অপরাধীর তালিকাতেও নাম উঠেছিল দু’জনের। আসাদ ও গোলাম উভয়ের মাথায় দাম ৫ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল পুলিশ। তার পর থেকেই তন্ন তন্ন করে খোঁজ চলছিল দুই অভিযুক্তের।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, উমেশ হত্যাকাণ্ডের পর আসাদ লখনউতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এর পর সেখান থেকে কানপুর এবং মেরঠ হয়ে দিল্লি পৌঁছন। এর পর তিনি মধ্যপ্রদেশে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেই জন্যই তিনি ঝাঁসি পৌঁছেছিলেন। আতিকের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঝাঁসিতে নিজের বাড়িতে আসাদ এবং গুলামকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ছদ্মবেশ ধারণ করে একটি বাইকে চেপে বাবিনা রোড ধরে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, আতিকেরই দলের এক সদস্য পুলিশকে আসাদের অবস্থান সম্পর্কে জানিয়েছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, আসাদের ঝাঁসি ছাড়ার খবর পেয়ে দু’জন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে ১২ জনের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের একটি দল ঝাঁসির বাবিনা রোডে অভিযান চালায়। আতিক এবং গুলামকে বাইকে দেখতে পেয়ে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশেষ টাস্ক ফোর্সের পুলিশদের লক্ষ্য করে গুলামই প্রথম গুলি চালান। এর পর পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে পুলিশও। আসাদ এবং গুলামকে লক্ষ্য করে মোট ৪২ রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। মৃত্যু হয় আসাদ এবং গুলামের। পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, আসাদ এবং গুলামের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র, নতুন মোবাইল এবং সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

‘গ্যাংস্টার’ তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন বিধায়ক আতিক বর্তমানে জেলবন্দি। সম্প্রতি তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে প্রয়াগরাজের আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ১০০টিরও বেশি মামলা রয়েছে।

আসাদ এবং গুলামের আগেও উমেশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নাম জড়ানো দুই অভিযুক্ত পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার পর থেকেই সুর বদলেছিলেন আতিক। বার বার অভিযোগ করেছিলেন ভুয়ো ‘এনকাউন্টার’ করে পুলিশ তাঁকে মারতে চাইছে। আর তাঁর এই অভিযোগের মধ্যেই পুলিশের গুলিতে হত তাঁর ছোট পুত্র আসাদ এবং এক সহযোগী গুলাম।

আসাদ এবং গুলামকে নিয়ে উমেশ হত্যাকাণ্ডে নাম থাকা চার জন এখনও পর্যন্ত পুলিশের এনকাউন্টারে প্রাণ হারিয়েছেন। পুলিশ এখনও গুড্ডু মুসলিমকে খুঁজছে। অভিযোগ উমেশ হত্যার সময় বোমা মারার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি আর এক অভিযুক্ত সাবিরেরও খোঁজ চলছে। আতিকের স্ত্রী শায়েস্তাও পলাতক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement