প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
দক্ষিণ ভারতের একমাত্র রাজ্য কর্নাটকে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। চার মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে যাওয়া ওই রাজ্যে গত সাত দিনে এ নিয়ে দু’বার সফর করে নরেন্দ্র মোদী বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে কতটা মরিয়া দল। আজ ভোটমুখী কর্নাটকের কলবুর্গী ও ইয়াদগিরির এলাকার জন্য কয়েক হাজার কোটি টাকার একাধিক জনমুখী প্রকল্পের শিলান্যাস করে মোদী বলেন, ‘‘অতীতের সরকার যে এলাকাগুলিকে অনুন্নত বলে দাগিয়ে দিয়েছিল, সেই এলাকাগুলির উন্নয়ন করাই আমাদের লক্ষ্য।’’
অন্য দিকে সদ্য সমাপ্ত জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে চলচ্চিত্র নিয়ে অযথা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি জনসমর্থন বাড়াতে সব ধর্ম ও শ্রেণিকে কাছে টানার উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের মতে, ‘পাঠান’ ছবিটি নিয়ে ধর্মভিত্তিক বিতর্ক বন্ধ করার উপরে জোর দেওয়া ছাড়াও সংখ্যালঘুদের কাছে পৌঁছনো, সাংসদ-নেতাদের নিজেদের এলাকায় সুফি সঙ্গীতানুষ্ঠান করার উপরে জোর দিয়েছেন মোদী। খ্রিস্টানদের পাশে থাকার বার্তা দিতে গির্জার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তেমনি হিন্দুদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বাল্মীকি সমাজের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। একই ভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে, সেখানে বিতর্ক ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন তিনি। লক্ষ্য সমাজের সব শ্রেণির মধ্যে জনভিত্তি বাড়ানো। ভোটের ঠিক আগে এ ধরনের উদ্যোগ দেখে কংগ্রেসের কটাক্ষ, হিন্দুত্বে যে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে চিঁড়ে ভিজবে না, তা বুঝতে পারছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রশ্ন উঠেছে, এত দিন কেন সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছনোর ওই প্রয়াস দেখা যায়নি প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর দলের!
আজ মোদী এক দিনের সফরে কর্নাটকে গিয়ে একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প ঘোষণা করেন। বিজেপি সূত্রের মতে, কর্নাটকে সরকার ধরে রাখার প্রশ্নে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, গোষ্ঠী কোন্দল, নানাবিধ দুর্নীতি নিয়ে মানুষ ক্ষুব্ধ। যার সুযোগে গত কয়েক বছরে ওই রাজ্যে তৃণমূল স্তরে ক্ষমতা বাড়িয়ে বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়ার প্রশ্নে আশাবাদী কংগ্রেস। অন্য দিকে কর্নাটকে বিজেপির বড় সমস্যা, জনপ্রিয় নেতার অভাব। জল্পনা শুরু হয়েছে—বাসবরাজ বোম্মাইকে সরিয়ে কি ফের ৪ বারের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাকেই মুখ্যমন্ত্রী মুখ করা হবে? ইয়েদুরাপ্পার দাবি, তিনি ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীকে কর্নাটকের জন্য আরও বেশি সময় দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাতে রাজি।
কলবুর্গী ও ইয়াদগিরিতে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করে প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসকে নিশানা করেন। বলেন, “ইয়াদগিরি উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলার তালিকায় অন্তর্গত হয়েছে। কারণ আমাদের দলের উদ্দেশ্য হল উন্নয়ন। ভোটব্যাঙ্ক নয়।”