নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
গোটা গেরুয়া শিবির এখন অযোধ্যার দিকে তাকিয়ে। ২২ জানুয়ারি বহু প্রতীক্ষিত রামমন্দিরের উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবারেই অযোধ্যায় ছিলেন। একগুচ্ছ প্রকল্পের সূচনার পাশাপাশি রামকে ঘিরে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছেন শনিবারেই। আর রবিবারে তাঁর মাসিক ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেও রাম-নাম করলেন মোদী। উদ্বোধনের দিন রামভক্তদের অযোধ্যা যেতে আগেই নিষেধ করেছিলেন তিনি। বাড়িতে বাড়িতে প্রদীপ জ্বালাতে বলেছিলেন। আর রবিবার দেশবাসীকে ওই দিন ‘রামভজন’ গাওয়ার পরামর্শ দিলেন। সেই সঙ্গে সমাজমাধ্যমে ‘রামভজন’ নামে প্রচারের অনুরোধ জানালেন।
বছরের শেষ দিনের ‘মন কি বাত’-এ আসলে যেন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সূচনা করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সরাসরি না হলেও রবিবারের বক্তৃতা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেল, মোদী নির্বাচনী প্রচারে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব চাইছেন। রাত পোহালেই নতুন বছর। আর সেই ২০২৪ সালে ভারতের সবচেয়ে বড় ঘটনাক্রম লোকসভা নির্বাচন। ঠিক তার আগেই নতুন রামমন্দিরের উদ্বোধন। ফলে সেই বিষয়টাই মোদীর বক্তব্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে।
রবিবার ছিল ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের ১০৮তম পর্ব। প্রসঙ্গত, হিন্দু বিশ্বাসে ১০৮ সংখ্যাকে পবিত্র মনে করা হয়। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি এই সংখ্যার ‘পবিত্রতা’ নিয়েও নিজের মত প্রকাশ করেন। জানান, একটি জপমালার ১০৮টি পুঁতির মতো এই পর্বটিও তাঁর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোদী বলেন, ‘‘১০৮ সংখ্যার অনেক মাহাত্ম্য রয়েছে। এর পবিত্রতা গভীর অধ্যয়নের বিষয়। জপমালায় ১০৮টি পুঁতি থাকে, ১০৮ বার জপ করতে হয়। দেশে ১০৮টি দিব্যক্ষেত্র রয়েছে, মন্দিরে ১০৮টি সিঁড়ি, ১০৮ ঘণ্টা থাকে। ১০৮ সংখ্যাটি অনেক বিশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত।’’ এর পরেই এই পর্ব তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে মোদী বলেন, ‘‘আমাদের নতুন বছরে নতুন শক্তি এবং সঙ্কল্প নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।’’
সেই সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন, ভারত এখন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। দেশবাসী উন্নত ভারতের চেতনায় পরিপূর্ণ। ভারতে আত্মনির্ভরশীলতার অনুভূতি তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালেও আমাদের একই চেতনা এবং গতি বজায় রাখতে হবে। ২০২৩ সালে দেশের খেলোয়াড় এবং শিল্পীদের সাফল্যের কথাও তিনি রবিবার উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতের সম্ভাবনা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক এবং আমাদের এঁদের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ভারতে যে ‘ইনোভেশন হাব’ তৈরি হচ্ছে তা থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে আমরা থামছি না।’’ চন্দ্রযানের সাফল্য থেকে ভারতে সুস্বাস্থ্যের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেছেন মোদী।