প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি দলের জন্য অনুদান চাইলেন নরেন্দ্র মোদী। শুধু তা-ই নয়, তিনি নিজে কত টাকা অনুদান দিয়েছেন সেটাও জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এও বলেন কেন অনুদান চাইছেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলার জন্য বিজেপি দলের উদ্যোগকে শক্তিশালী করতেই গোটা দেশের মানুষের এগিয়ে আসা উচিত।
রবিবার এক্স হ্যান্ডলে (পূর্বতন টুইটার) পোস্ট করে বিজেপিতে ‘অনুদান’ দেওয়ার কথা জানান মোদী। তিনি লেখেন, ‘‘বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করতে বিজেপিতে আমার অবদান রাখতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’’ এখানেই থেমে থাকেননি মোদী। এর পরই দেশবাসীর কাছে আর্জি জানান, যাতে সকলে ‘নমো’ অ্যাপের মাধ্যমে ‘দেশ গঠনের কাজে’ সাহায্য করেন। প্রধানমন্ত্রী এও জানান তিনি কত টাকা দিয়েছেন। বিজেপির হয়ে ২০০০ টাকা অনুদান দেন মোদী।
দলের জন্য অনুদান চেয়ে প্রচার সম্প্রতিই শুরু করেছে বিজেপি। ১ মার্চ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তিনি এক হাজার টাকা দিয়ে বিজেপির সেই প্রচার শুরু করেন। নড্ডা জানিয়েছিলেন, ‘বিকশিত ভারত’ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করার জন্য বিজেপিকে দা করেছেন। তিনিও সকলকে এগিয়ে আসতে বলেন এই কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিজেপি দলীয় তহবিলে ৭১৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল। যা আগের অর্থবছরের থেকে ১৭ শতাংশ বেশি ছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিজেপি ভাঁড়ারে এসেছিল ৬১৪ কোটি টাকা। অন্য দিকে, কংগ্রেসে সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে হাত শিবির দলীয় তহবিলে ৭৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছিল।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খায় দেশের শাসকদল। নির্বাচনী বন্ড ‘অসাংবিধানিক’ বলে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানিয়েছিল, নির্বাচনী বন্ডের বিধি তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনকে লঙ্ঘন করছে। নির্বাচনী বন্ডে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি জানান, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) এই ধরনের বন্ড দেওয়া বন্ধ করবে।
শীর্ষ আদালত আরও বলেছিল, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে কত টাকা অনুদান পায়, সেই তথ্য প্রকাশ করতে হবে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ওই তথ্য তুলে দিতে হবে নির্বাচন কমিশনের হাতে। সেই রায় প্রকাশ্যে আসার পরেই ‘বিপদ’-এ পড়ে রাজনৈতিক দলগুলি। ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের আয়ের উৎস বৃদ্ধি করতেই বিজেপি এই পদক্ষেপ করেছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশ।