(বাঁ দিকে) শাহবাজ় শরিফ এবং ইমরান খান। — ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে তিনিই আবারও বসতে চলেছেন তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। রবিবার তাতেই সিলমোহর পড়ল। সে দেশের পার্লামেন্টের অধিবেশনেই চূড়ান্ত হয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শাহবাজ় শরিফের নাম। তাঁর পক্ষে ভোট পড়ে ২০১।
পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে কম নাটক হয়নি। সদ্যসমাপ্ত সাধারণ নির্বাচনে ‘কারচুপি’র অভিযোগ তুলেছিল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। নির্বাচনে কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই কারা সরকার গড়বে, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়। তবে পরে সেই জট কাটে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি জানা যায়, নওয়াজ় শরিফের পিএমএল-এনের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে জোট সরকার গড়তে চলেছে পিপিপি। সে দিন রাতে এক পাশে শাহবাজ় এবং অন্য পাশে বাবা আসিফ জ়ারদারিকে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিলাবল। সেখানেই তিনি পিএমএল-এনকে সমর্থনের কথা জানিয়ে দেন তিনি।
বিলাবলের ঘোষণার পরই সরকার গঠনের জট কাটে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শাহবাজ়ের নাম ঘোষণা করা হয়নি। রবিবার ছিল পার্লামেন্ট অধিবেশন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিজেদের পছন্দের কথা জানান পার্লামেন্টের সদস্যেরা (সাংসদ)। রবিবার শাহবাজ়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পিটিআই-এর নেতা ওমর আইয়ুব। যদিও ভোটাভুটিতে ৯২টির বেশি ভোট পাননি তিনি। ৩৩৬ সদস্যের পাক সংসদে প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে কমপক্ষে ১৬৯টি ভোট পেতেই হয়। রবিবার শাহবাজ় ২০১টি আসন পেয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত হন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরকার ফেলার চেষ্টা করেন। বিরোধীরা পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। সেই অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারায় ইমরানের দল পিটিআই। তার পর শাহবাজ়ের নেতৃত্বেই বিরোধীরা ভারতের পড়শি দেশে সরকার গঠন করে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোটের ফল প্রকাশ হয়। তাতে দেখা যায়, পিএমএল-এন জিতেছে ৭৫টি আসন, পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। আর সবাইকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন ইমরানের দল পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। তাঁরা জিতেছিলেন মোট ৯৩টি আসনে। এই ফলের জেরে কোনও দলই একক ভাবে সরকার গড়ার মতো অবস্থায় ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জট কাটে। পিএমএল-এন এবং পিপিপি হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার লক্ষ্য নেয়। তাদের সমর্থন জানায় দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি।