প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
দেশের দ্রুত ও সার্বিক, দীর্ঘস্থায়ী অথনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে সব রাজ্যকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ দিল্লিতে দেশের সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের বৈঠকে কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক সহযোগিতার নীতি মেনে নতুন ভারত গড়তে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে রাজ্যগুলিকে তাল মিলিয়ে চলার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
মুখ্যসচিবদের নিয়ে দেশের প্রথম বৈঠকটি প্রধানমন্ত্রী ডেকেছিলেন গত বছর, ধর্মশালাতে। এ বারে ওই বৈঠকটি হচ্ছে নয়াদিল্লিতে। এ বারের বৈঠকে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেগুলি হল, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের উপর জোর। পরিকাঠামোগত লগ্নি, বিনিয়োগের প্রশ্নে লাল ফিতের ফাঁস আলগা করা, মহিলা স্বশক্তিকরণ, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি এবং দক্ষতা বৃদ্ধি। সূত্রের মতে, বৈঠকে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত প্রকল্প সময়ে শেষ করা, একাধিক রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিকাঠামোগত প্রকল্পগুলিতে জমি অধিগ্রহণজনিত সমস্যা দূর করা, আগত সমস্যাগুলি নতুন পথে হেঁটে সমাধানের প্রশ্নে বাড়তি জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী উপস্থিত ছিলেন।
মুখ্যসচিবদের এর আগের বৈঠকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যপূরণের উপরে জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার এখনও ৭ শতাংশের কম। স্বাধীনতার একশো বছরের মধ্যে উচ্চ আয়ের শ্রেণির দেশগুলির তালিকায় প্রবেশ করতে হলে প্রয়োজন ৮ থেকে ৮.৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি। যা ছুঁতে গেলে পরিকাঠামো, ছোট-মাঝারি শিল্প, কৃষি, দক্ষ কর্মীর মতো বিষয়গুলিতে নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যা কেবল কেন্দ্রের পক্ষে একা করা সম্ভব নয়। তাই রাজ্যগুলিকে পাশে পেতেই কেন্দ্রের ওই উদ্যোগ। আজ ওই বৈঠক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী টুইট করে বলেন, ‘‘বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নীতি নিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করার প্রশ্নে এটি হল আদর্শ মঞ্চ। যা দলগত সংহতিকে শক্তিশালী করে ভারতকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সক্ষম।’’ সূত্রের মতে, ওই বৈঠকে যে বিষয়গুলি উঠে আসবে, সে বিষয়ে আগামী লোকসভার আগেই একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।
রাজ্য বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠালেও ঘরোয়া ভাবে শাসক শিবির বলছে, মোদী সরকার মুখে কেন্দ্র-রাজ্য সুসম্পর্ক, বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে উন্নয়ন, লগ্নির পরিবেশ তৈরির কথা বললেও কার্যক্ষেত্রে এই সরকারের বিরুদ্ধে গত আট বছরে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, সম্প্রতি একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের গড়িমসি, বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির যথেচ্ছ ব্যবহার কোনও ভাবেই সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় মনোভাবের পরিচায়ক নয়।