নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
স্বচ্ছ ভারত, আয়ুষ্মান ভারতের পরে এ বার ‘বুদ্ধিমান ভারত’।
নতুন মোদী জমানায় এই নতুন প্রকল্প নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। যার প্রধান লক্ষ্য হবে, ৮ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের মস্তিষ্কের উন্নতিতে নজর দেওয়া। যাতে বয়সের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তাদের বোধবুদ্ধি তৈরি হয়। প্রাথমিক ভাবনাচিন্তা অনুযায়ী, এই প্রকল্প চালু হলে তার দু’টি দিক থাকবে। এক, শিশুদের পুষ্টি, বয়স অনুযায়ী উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া। দুই, বয়স অনুযায়ী পড়তে ও লিখতে পারা, অঙ্ক কষা এবং বোঝার ক্ষমতা তৈরি করতে প্রাথমিক শিক্ষায় গুরুত্ব।
মোদী সরকারের আমলে জাতীয় পুষ্টি মিশনের নাম পাল্টে ‘পোষণ অভিযান’ হয়েছে। তার আওতায় আইসিডিএস-এ ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু, তাদের মায়েদের জন্য খাদ্য, প্রাক-স্কুল শিক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা, টিকাকরণ, নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজ চলে। চলছে সর্ব শিক্ষা অভিযানও।
প্রশ্ন উঠেছে, এই সব প্রকল্পকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেই কি ‘বুদ্ধিমান ভারত’-এর নতুন মোড়ক দেওয়া হবে? সরকারি সূত্রের জবাব, গোটা পরিকল্পনাই প্রাথমিক স্তরে। গত ২২ জুন নীতি আয়োগে দেশের ৪০ জন অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৈঠক করেছিলেন। শিক্ষা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞেরা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, শিশুর জন্মের প্রথম ৩ হাজার দিন বা মোটামুটি ৮ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া জরুরি। তা হলেই ‘বুদ্ধিমান’ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি হবে।
আরও পডু়ন: কিশোর মন জয়ে চাঁদের হাতছানি, কুইজে সফল হলেই শ্রীহরিকোটার টিকিট, ঘোষণা মোদীর
কেন দরকার ‘বুদ্ধিমান ভারত’? বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বাস্তবে প্রাথমিক শিক্ষার মান খুবই খারাপ। শিক্ষার অবস্থা নিয়ে ২০১৮-য় অসরকারি সংগঠন ‘প্রথম’-এর রিপোর্টে (নীচের সারণি দ্রষ্টব্য) তার ইঙ্গিত রয়েছে। এছাড়া, সর্বশেষ জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা (নীচের সারণি) বলছে, পাঁচ বছরের কমবয়সিদের মধ্যে দেশে ৫৮.৪ শতাংশ শিশু রক্তাল্পতার শিকার। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, বিহারের মতো রাজ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ। ২০১৭-র হিসেব বলছে, দেশে এক হাজার শিশুর জন্ম হলে পাঁচ বছরের আগেই ৩৭টি শিশুর মৃত্যু হয়। সদ্যোজাত শিশুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার প্রতি ১ হাজারে ৩৩।
নীতি আয়োগের এক কর্তা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গুজরাত মডেল নিয়ে সমালোচকরা বলতেন, গুজরাতের শিশুরা কম উচ্চতা ও ওজনের সমস্যা, রক্তাল্পতায় ভোগে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিশ্চয় তিনি একই সমালোচনা শুনতে
চাইবেন না। গরিব ঘরের শিশুদের কথা ভাবলে পাঁচ বছরে পরে ভোটেও ফায়দা মিলবে।’’