India-Myanmar Relations

গৃহযুদ্ধ সামলাতে কি ভারতের দ্বারস্থ মায়ানমার? মোদীর সঙ্গে জুন্টা প্রধানের বৈঠক নিয়ে জল্পনা

বৈঠকের পরে মোদী বলেন, ‘‘ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে যোগাযোগ, সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং আরও অনেক ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছি।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৩
Share:

(বাঁ দিকে) মিন অং হ্লাইং , নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।

তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের প্রধান জেনারেল মিন আং হ্লাইংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এই পার্শ্ববৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতা আলোচনা করেছেন বলে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্ককে শুক্রবার মোদী পার্শ্ববৈঠক করতে পারেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।

Advertisement

ভূমিকম্প এবং গৃহযুদ্ধের অভিঘাতে বিপর্যস্ত মায়ানমার সরকারের সঙ্গে মোদীর এই বৈঠককে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ। বৈঠকের পরে মোদী বলেন, ‘‘ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে যোগাযোগ, সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং আরও অনেক ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছি।’’

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী আউং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। তার পর থেকেই ক্রমশ ভারতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে শুরু করেছিল মায়ানমার। পরিবর্তে চিনের সঙ্গে সখ্য বাড়াচ্ছিল জুন্টা। কিন্তু পট পরিবর্তন হয়েছে গত দেড় বছরের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে। সে দেশের প্রায় অর্ধেক অঞ্চল এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। আর এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে জুন্টা।

Advertisement

গত মাসে রাজধানী নেপিডোর ভারতীয় দূতাবাসে গিয়েছিলেন হ্লাইংয়ের দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অং সান এবং উপ-বিদেশমন্ত্রী লুইন। মায়ানমারের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অভয় ঠাকুর এবং বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা সেখানে বৈঠকে হাজির ছিলেন। প্রকাশিত খবরে দাবি, আলোচনায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বাণিজ্য এবং পরিবহণক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পাশাপাশি ‘পারস্পরিক কৌশলগত স্বার্থের ক্ষেত্রে সহযোগিতার পথ অনুসন্ধান’ করার বিষয়টিও এসেছে। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পরে জুন্টা প্রধান মিন আং হ্লাইং এ বার গৃহযুদ্ধ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারস্থ হয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন।

অন্য দিকে, গত সপ্তাহের ভূমিকম্পে মায়ানমারের মৃতের সংখ্যা ৩০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে বহু জনপদ। এই পরিস্থিতিতে মায়ানমারের পাশে দাঁড়াতে ইতিমধ্যেই ‘অপারেশন ব্রহ্ম’ চালু করেছে ভারত। ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মায়ানমারে পৌঁছেছে ভারতীয় বায়ুসেনার সি১৩০জে বিমান। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে খাবার, কম্বল, তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, সোলার ল্যাম্প, জল পরিশোধক এবং গুরুত্বপূর্ণ ওষুধপত্র। গত শনিবার মোদী নিজেই হ্লাইংয়ের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের কথা জানান। সমাজমাধ্যমে লেখেন, “মায়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মহামান্য মিন আং হ্লাইংয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। ভয়াবহ ভূমিকম্পে বহু মানুষের প্রাণহানি হওয়ায় আমাদের গভীর সমবেদনার কথা তাঁকে জানিয়েছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement