(বাঁ দিকে) ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। ছবি: এক্স হ্যান্ডল থেকে নেওয়া।
বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইতি টানার প্রক্রিয়া নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর।
ইউক্রেন যদি আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা থেকে সরে আসে, তবে মস্কো যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে পারে বলে বার্তা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই পরিস্থিতিতে মোদীর সফরে রুশ-ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধ হওয়ার আশা দেখছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন মোদী। বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সংঘাতে ইতি টানতে ভারতের তরফে প্রয়োজনীয় প্রয়াস নেওয়া হবে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন মোদী। গত জুন মাসে জি৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ইটালি গিয়ে জ়েলেনস্কির সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক করেছিলেন তিনি। তার আগে জাপানেও দু’জনের একান্তে আলোচনা হয়েছিল। একাধিক বার ফোনে দু’জনের কথা হয়েছে।
অন্য দিকে, চলতি মাসে মস্কোয় গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলিঙ্গন করলেও মোদী তাঁর সামনেই ইউক্রেনে আগ্রাসন এবং শিশুহত্যার স্পষ্ট নিন্দা করেছেন। যদিও মোদীর মস্কো সফর এবং পুতিনকে আলিঙ্গনের নিন্দা করে জ়েলেনস্কি বলেছিলেন, ‘‘বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী এক জন যুদ্ধাপরাধীকে আলিঙ্গন করছেন। শান্তিপ্রক্রিয়ায় পক্ষে এটা বিরাট ধাক্কা।’’ মোদী-পুতিন বৈঠক নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছিল আমেরিকাও। এ প্রসঙ্গে আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছিলেন, “আমরা ভারতকে বলছি, ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের সমর্থন প্রয়োজন।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে উজবেকিস্তানে শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর বৈঠকের ফাঁকে পুতিনের সঙ্গে প্রথম বার মুখোমুখি বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই মোদী পুতিনকে বলেছিলেন, ‘‘এটা যুদ্ধের সময় নয়।’’ রুশ অধিকৃত ডনেৎস্ক, লুহানস্ক, জ়াপোরিজ়িয়া এবং খেরসনে পুতিন সরকার তথাকথিত গণভোটের আয়োজন করার পরে জ়েলেনস্কিকে ফোনে মোদী আশ্বাস দিয়েছিলেন কোনও অবস্থাতেই ইউক্রেনের অখণ্ডতার প্রতি আঘাতে সায় দেবে না ভারত।
অন্য দিকে, ইউক্রেনের জমি দখলের রুশ তৎপরতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলি বার বার প্রস্তাব আনলেও ভারত সেই ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। আবার এরই পাশাপাশি, ইউক্রেনবাসীর জন্য মানবিক সাহায্য চালিয়ে যাওয়ার কথা মোদী সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। জ়েলেনস্কির পাশাপাশি রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভারভও ইতিমধ্যেই যুদ্ধ থামাতে নয়াদিল্লির ‘বৃহত্তর ভূমিকা’র সম্ভাবনার বার্তা দিয়েছেন। মোদীর ইউক্রেন সফরে কি সত্যি হবে সেই পূর্বাভাস?