প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
গুজরাতে ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে শহুরে নকশালদের উপর খড়্গহস্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে দাঁড়িয়ে এর আগে দু’বার বিষয়টি নিয়ে তোপ দেগেছেন সাম্প্রতিক অতীতে। সোমবার শহুরে নকশালের নাম অবশ্য আগের বারের মতো মুখে আনেননি। কিন্তু কেভারিয়ায় সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মতিথি উপলক্ষে তাঁর মূর্তির (স্ট্যাচু অব ইউনিটি) সামনে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করে নাম-না করে মোদী পাকিস্তান এবং শহুরে নকশালদের নিশানা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। তাঁর কথায়, ‘‘বহিঃশত্রুর পাশাপাশি দেশের ভিতরের শত্রুরাও ভারতের অখণ্ডতা নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এই ধরনের চেষ্টার মোকাবিলা করতে দায়িত্ববান হতে হবে নাগরিকদের।’’
সর্দার পটেলের জন্মতিথিটি সরকার পালন করে রাষ্ট্রীয় একতা দিবস হিসেবে। মোদী আজ দেশের ঐক্যের পতাকা উড়িয়েছেন ভোটমুখী গুজরাতে দাঁড়িয়ে। তাঁর কথায়, “ভারতে কখনও জোর করে ঐক্য চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। এ আমাদের অনন্য সম্পদ। ভারতের এই ঐক্য শত্রুদের চোখে সহ্য হয় না। শুধু আজ নয়। এ কথা হাজার বছর ধরে সত্য। এমনকি যখন আমরা দাসত্ব করেছি তখনও বিভিন্ন বিদেশি আক্রমণকারী দেশের ঐক্য ভাঙার জন্য যা পারে করার চেষ্টা করেছে।” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “দীর্ঘ দিন ধরে যে বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, আজও দেশ তার কুফল ভোগ করছে। আমরা দেশ ভাগ দেখেছি এবং শত্রুরা তার সুযোগ নিয়ে চলেছে।”
প্রধানমন্ত্রীর মতে, বিভেদকামী শক্তিগুলি এখনও যথেষ্ট ক্রিয়াশীল। তারা দেশবাসীকে জাতি, ধর্ম এবং ভাষার ভিত্তিতে লড়িয়ে দিতে চায়। ইতিহাসও এমন ভাবে সামনে নিয়ে আসা হয় যাতে মানুষ একে অপরকে সহ্য করতে না পারে। এর পরেই তিনি আক্রমণের সূচিমুখ বিস্তৃত করে বলেছেন, “এরা শুধু পরিচিত বহিঃশত্রু নয়। অনেক সময়েই এই শক্তি আমাদের মধ্যে লোভ, দুর্নীতি, পক্ষপাতিত্ব, পিঠ চাপড়ানো, ক্ষুদ্র স্বার্থ ঢুকিয়ে দিতে থাকে। দেশের সন্তান হিসেবে এই শক্তির জবাব দিতে আমাদের এক থাকতে হবে। দেশের ঐক্যকে জোরদার করতে প্রত্যেক নাগরিককে দায়িত্ববান হতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০২২ সালের জাতীয় ঐক্য দিবসকে আমি একটি বিশেষ উপলক্ষ হিসেবে দেখছি। এই বছর আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করেছি। আমরা নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।” ভারতে সর্দার পটেলের মতো নেতা না থাকলে কী হত সেই প্রশ্ন তুলে মোদী প্রশ্ন তোলেন, ৫৫০টিরও বেশি রাজ্য এক না হলে যে কী ঘটত। তিনি বলেন, “আমাদের অধিকাংশ রাজাই যদি ত্যাগ স্বীকার না করতেন, তাহলে আজ আমরা যে ভারত দেখছি তা কল্পনাও করতে পারতাম না। সর্দার পটেল এই কাজটিই করে দেখিয়েছিলেন।”