প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যে সরকার গড়বে দল। তাই আগামী ৭-৮মে তিন রাজ্যেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। মোদী-শাহ জুটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে অসম মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে। ভোটের ফল প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পরেও সরকারের শীর্ষ দুই নেতার টানা দু’দিন উত্তর-পূর্ব ভারতে অবস্থান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বিজেপি নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, বিধানসভার ভোট শেষ হতেই এ হল লোকসভার ভোট প্রস্তুতিতে নেমে পড়া। তা ছাড়া দল যে উত্তর-পূর্বের মানুষের সঙ্গে রয়েছে, মোদী-শাহ জুটির উপস্থিতিতে সেই বার্তা দেওয়াও সম্ভব হবে।
৭ মার্চ নাগাল্যান্ডে এনডিপিপি-বিজেপির জোটের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিয়ো শপথ নেবেন। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। উপস্থিত থাকবেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও। বিজেপি সূত্রের মতে, ওই শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে হিমন্তকে নিয়ে শিলং উড়ে যাবেন মোদী-শাহ। সেখানে সেই দিন শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে কনরাড সাংমার। পরে রাতে গুয়াহাটিতে ফিরে এসে অসম মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদী-শাহ। সূত্রের মতে, আসন্ন লোকসভায় উত্তর-পূর্বে জেতার প্রশ্নে সরকারের রণকৌশল কী হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বৈঠকে। পরের দিন ৮ মার্চ ত্রিপুরায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ রয়েছে। সেখানেও উপস্থিত থাকবেন মোদী-শাহ জুটি। সূত্রের মতে, রাতে দিল্লি ফিরে আসার কথা রয়েছে মোদী-শাহের।
বিধানসভা ভোটে তিন রাজ্যেই জয়লাভ করেছে দল। তার পরেও যে ভাবে মোদী-শাহ জুটি উত্তর-পূর্বের ছোট রাজ্যগুলির শপথগ্রহণে উপস্থিত থাকছেন তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে কার্যত ছোট শরিক হিসেবে জোট সরকারে রয়েছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও ত্রিপুরার মতো ওই দুই রাজ্যেও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দু’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে থাকার বার্তা দিতে চাইছেন মোদী-শাহ। লক্ষ্য ওই জোট ধরে রেখে আসন্ন লোকসভায় নির্বাচনে লড়ে জয় নিশ্চিত করা।
সিকিমকে ধরে উত্তর-পূর্বে মোট ২৫টি লোকসভা আসন রয়েছে। গত লোকসভায় অসমে বেশ কিছু আসন বিজেপির হাতছাড়া হয়েছিল। সে কারণে আগামী লোকসভা নির্বাচনে একেবারে ২৫টি আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে দল। সেই লক্ষ্যেই উত্তর-পূর্বে ধারাবাহিক পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও কেন্দ্র যে উত্তর-পূর্বের পাশে রয়েছে সেই বার্তা দিতে উদ্যোগী হয়ে টানা দু’দিন সেখানে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতির মাধ্যমে বোঝানো যাবে দল সত্যিই উত্তর-পূর্বের বাসিন্দাদের কাছে দায়বদ্ধ।’’ কার্যত উত্তর-পূর্বে বিজেপি বা তাদের জোট সঙ্গী ছাড়া অন্য কোনও দল যাতে কোনও লোকসভা আসন না পায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।