গুলাম নবি আজাদ। ছবি পিটিআই।
রাজ্যসভার সদস্যপদের মেয়াদ শেষ হওয়ার সময়ে তাঁর প্রশংসা করতে গিয়ে চোখে জল এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আর সেই দৃশ্য জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক শিবিরে গুলাম নবি আজাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের বিরোধিতা করেছিলেন আজাদ। আবার তিনি জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক জেলা উন্নয়ন পরিষদ নির্বাচন সফল ভাবে করানোর জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রশংসা করেছেন। কাশ্মীরিদের একাংশের মতে, এটা বোঝাই যাচ্ছে রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও আজাদের সঙ্গে মোদী সরকারের সম্পর্ক ভাল। তাঁদের প্রশ্ন, তবে কি কেন্দ্র আজাদকে জম্মু-কাশ্মীরে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখতে চায়?
কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক গুল মহম্মদ ওয়ানির মতে, ‘‘বিজেপি বিশেষ মর্যাদা লোপে সফল হয়েছে। এ বার তারা জম্মু-কাশ্মীরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সফল করতে চায়। এই কাজে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে আজাদই এই মুহূর্তে যোগ্যতম ব্যক্তি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সুশাসনের নজির তৈরি করেছিলেন আজাদ। রাজ্যসভা থেকে তাঁর বিদায়ের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তার বৃহত্তর অর্থ আছে বলেই আমার মনে হয়। সময়ই বলবে আমার অনুমান ঠিক কি না।’’
গুল মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আজাদ জম্মু-কাশ্মীর কংগ্রেসের সেই বিরলতম নেতাদের এক জন যিনি জম্মুর ডোডা এলাকা থেকে এসে নিজের দক্ষতায় জাতীয় রাজনীতির দরবারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। দিল্লি দরবারে তাঁর বক্তব্যের গুরুত্ব আছে।
প্রায় একই সুর জম্মু-কাশ্মীর কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা গুলাম নবি মোঙ্গার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখন জম্মু-কাশ্মীরে কংগ্রেসের মূল ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে জম্মুতে। সেখানকার বাসিন্দাদের বিশেষ মর্যাদা লোপে আপত্তি নেই। কিন্তু তাঁরা চান জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের চাকরি ও জমির অধিকার রক্ষার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আজাদও সেই দাবি সমর্থন করেছেন। মোদী সরকারের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে তিনিই যোগ্যতম ব্যক্তি।’’ মোঙ্গার কথায়, ‘‘চলতি বছরেই কেন্দ্র জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট করাতে পারে বলে ধারণা অনেক শিবিরের। গত বছরে তৈরি হওয়া ডিলিমিটেশন কমিশনের কয়েক মাসের মধ্যেই নির্বাচনী কেন্দ্রের সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ করে ফেলার কথা। সে ক্ষেত্রে আজাদকে গুরুত্বপূর্ণ মুখ হিসেবে তুলে ধরা হতে পারে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পিডিপি নেতারও বক্তব্য, ‘‘যা ঘটছে তা বিস্ময়কর। আজাদ হয়তো কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কয়েকটি বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা বলছেন।’’