মুখোমুখি শি চিনফিং ও নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার
চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংকে সাদর অভ্যর্থনা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তামিলনাড়ুর মমল্লপুরমে খোলামেলা পরিবেশে শুক্রবার কথা হল দু’জনের। এই সাক্ষাৎ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল মমল্লপুরম মন্দির প্রাঙ্গনেই।
শুক্রবার ভারতীয় সময় দুপুর আড়াইটে নাগাদ শি চিনফিং নামেন চেন্নাই বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বনওয়ারিলাল পুরোহিত এবং মুখ্যমন্ত্রী এডাপাড্ডি পালানস্বামী। সেখানেই একপ্রস্থ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঠিক এই সময়েই প্রধানমন্ত্রী টুইটারে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এক গুচ্ছ বার্তা শেয়ার করেন।
ঘণ্টাখানেকের মধ্যে শি চিনফিং-এর মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী। সৌজন্য সাক্ষাৎকারের জন্যে ঐতিহ্যবাহী তামিল পোশাককে বেছে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সাত শতকে পল্লব রাজাদের তৈরি করা ইউনেস্কোর অন্যতম হেরিটেজ মমল্লপুরমের নানা পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ান দুই দেশের প্রধান। দু’জনের মধ্যে কয়েক প্রস্থ কথা হয় মন্দির দর্শন চলাকালীনই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে পঞ্চরথ, অর্জুন মন্দির, কৃষ্ণমন্দির ঘুরিয়ে দেখান। নিয়ে যান সমুদ্র তীরবর্তী মন্দিরেও। বেশ কয়েকবার করমর্দন করতে দেখা যায় তাঁদের। ডাবের জলও খেতে দেখা যায় তাঁদের।
দেখুন টুইট:
এ দিন শি চিনফিংকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্যে ঢেলে সাজানো হয় মমল্লপুরম ও তার চারপাশ। চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে মমল্লপুরমের রাস্তায় সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় শিল্পীরা রাস্তার দু’ধারে নাচে গানের আসর বসান। সমুদ্র তীরের মন্দির প্রাঙ্গনে আয়োজিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে কথাকলি, কুচিপুরীর মতো দক্ষিণী ঘরানার নাচও প্রদর্শিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:চেন্নাইয়ে চিনা প্রেসিডেন্টকে রাজকীয় অভ্যর্থনা, মোদী-চিনফিং বৈঠক ঘিরে বাড়ছে আগ্রহ
আরও পড়ুন:চিনফিংয়ের ভারত সফরের আগের মুহূর্তে ফের কাশ্মীর ইস্যু খুঁচিয়ে তুললেন ইমরান
সূত্রের খবর ছয় ঘণ্টার বেশি সময় একসঙ্গে কাটাবেন শি চিনফিং ও নরেন্দ্র মোদী। সন্ধে পৌনে সাতটা নাগাদ অনুষ্ঠিত হবে নৈশভোজে। সেখানেও রয়েছে চমক। চিনা রাষ্ট্রপতির জন্যে থাক্কালি রসম, আর্চাভিত্তা সম্বর, কলাই কুরুমা, কাভানারাসি হালুয়ার মতো খাঁটি দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
ভারত-চিনের মধ্যে এক ব্যপক দোলাচলের আবহে এই খোলামেলা সাক্ষাতের আয়োজন করা হয়েছে। ৩৭০ ধারা রদের পরে কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে চিনের সক্রিয়তাকে ভাল ভাবে নেয়নি ভারত। বারবারই বার্তা দেওয়া হয়েছে, এই অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তে কোনও অন্য পক্ষের তৎপরতা পছন্দ করছে না ভারত। একই সময়ে এই ইস্যুতে ক্রমেই সখ্য বেড়েছে পাকিস্তান ও চিনের। চিনফিং চেন্নাই বিমানবন্দরে নামার কয়েক ঘণ্টা আগেই ফের কাশ্মীর ইস্যু খুঁচিয়ে তুলেছেন ইমরান খান। এই আবহে এই সাক্ষাতের রাজনৈতিক তাৎপর্য তাই অনেক বেশি।
দেখুন টুইট:
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে সংঘাতহীন রাখতে আরও আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ, সন্ত্রাস এবং পরিবেশ দূষণ দমনে বাড়তি সহযোগিতা, সর্বোপরি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের ঘাটতি কমানোর বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দিতে চাইছেন মোদী। চেষ্টা করা হচ্ছে আলোচনাকে কাশ্মীর-কেন্দ্রিকতা থেকে বের করে আনতে।