(বাঁ দিকে) চলছে শ্রমিকদের উদ্ধারকাজ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
গত ১৫ দিন ধরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারাতে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন ৪১ জন নির্মানকর্মী। আটকে পড়ে শ্রমিকদের মঙ্গল এবং তাঁদের উদ্ধারকাজ যাতে সুরক্ষিতভাবে সম্পন্ন হয় সেই জন্য হায়দরাবাদে ‘কোটি দীপোৎসভম’-এ পুজো দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “হাজারও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফ থেকে শ্রমিকদের উদ্ধারে সমস্ত প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। কোনও রকম খামতি রাখা হচ্ছে না।”
তেলঙ্গানা বিধানসভা ভোটের পূর্বে নির্বাচনী প্রচারে সোমবার হায়দরাবাদ গিয়েছিলেন মোদী। সেখানে তিনি ‘কোটি দীপোৎসভম’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণও করেন। অনুষ্ঠানেক মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, “আমাদের অনেক সতর্কতার সাথে এই উদ্ধার অভিযান শেষ করতে হবে। এই প্রচেষ্টায় প্রকৃতি আমাদের ক্রমাগত কড়া পরীক্ষার মুখে ফেলেছে। তবে আমরা দৃঢ়ভাবে সে সকল প্রতিকূলতা সম্মুখীন করছি। আমরা সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জন্য প্রার্থনা করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “আজ যখন আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি এবং মানবকল্যাণের কথা বলছি, তখন আমাদের সেই সমস্ত শ্রমিক ভাইদের জন্যও প্রার্থনা করতে হবে যাঁরা গত দু’সপ্তাহ ধরে উত্তরাখণ্ডের একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে আছেন। শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের সাহস দিতে হবে। গোটা দেশ তাঁদের সঙ্গে আছে।”
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারাতে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে ধস নামে তার পর থেকে শ্রমিকদের উদ্ধারের কাজ চলছে। দু’দিক থেকে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। উপর থেকে উল্লম্ব ভাবে খোঁড়া শুরু হয়েছে রবিবারই। উল্লম্ব ভাবে খুঁড়ে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর জন্য মোট ৮৭ মিটার পথ খোঁড়া দরকার। রবিবার প্রথম দিকে ২০ মিটার পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে মোট ৩৭ মিটার পর্যন্ত খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। বড় কোনও বিপদ না হলে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেই পথ অতিক্রম করা সম্ভব বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে বড় বাধা আসে। ২৫ টন ওজনের আমেরিকান যন্ত্রটি ধ্বংসস্তূপের ভিতরে লোহার কাঠামোয় আটকে যায়। যন্ত্রের অনেক অংশ ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তাতে। কিছু কিছু যন্ত্রাংশ ভিতরেই আটকে ছিল। তা না সরানো পর্যন্ত সুড়ঙ্গের ওই অংশে আর হাতই দেওয়া যাচ্ছিল না।যন্ত্রাংশ সরানোয় সোমবার সামনের দিক থেকে খোঁড়ার কাজও শুরু হয়ে যাবে। সামনের দিক থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে অধিকাংশ রাস্তাই খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। বাকি কেবল ১০ থেকে ১২ মিটার। গাঁইতি-শাবল দিয়ে খুঁড়ে সেই রাস্তা অতিক্রম করে ফেলতে চান উদ্ধারকারীরা।