(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী। কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গত শুক্রবার কুণাল ঘোষের একটি সাক্ষাৎকার ঘিরে শাসকদল তৃণমূলের মধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার সে কথা বেমালুম ‘ভুলেই গিয়েছিলেন’ তৃণমূল মুখপাত্র। সোমবার সেই কুণালেরই আর এক মন্তব্য ঘিরে ফের আলোচনা এবং জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
কুণাল গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার একটি সভায় যোগ দিতে। চার দেওয়ালের মধ্যে সভা হলেও, সেখানে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য বাইরে আসার পর থেকেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কুণাল বলেছেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূলের যে নেতৃত্বই ভাষণ দিন, তিনি যদি শুভেন্দু অধিকারীর নাম করে চোর-টিটিংবাজ না বলেন, তা হলে তিনি পাঁচিলে বসে রয়েছেন।’’ এখানেই থামেননি তিনি। বলেন, ‘‘এই জেলায় এলেই বলতে হবে শুভেন্দু গদ্দার। কী ভাবে তিনি তৃণমূলকে ভাঙিয়ে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছিলেন।’’
পাঁচিলে বসে থাকার অর্থ কী? কুণাল তার ব্যাখ্যা দেননি। তবে তৃণমূলের অনেকের বক্তব্য, কুণাল বোঝাতে চেয়েছেন, যাঁরা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণ করছেন না, তাঁরা তৃণমূলে থাকলেও আসলে তলায় তলায় শুভেন্দুর সঙ্গে বোঝাপড়া রেখে চলছেন। এখন কৌতূহল হল, কুণাল কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য করেছেন? কোনও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। তবে জেলা তৃণমূলের একটি অংশের বক্তব্য, গত ১০ নভেম্বর ‘শহিদ দিবস’-এর সভায় দলের তরফে পূর্ণেন্দু বসু ও দোলা সেন গিয়েছিলেন নন্দীগ্রামে। তাঁরা কেউই শুভেন্দুর নাম করে আক্রমণ করেননি বলে জানা গিয়েছে।
এ ব্যাপারে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কে কী বলেছেন আমি জানি না। এ সব নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের বক্তব্য, ‘‘আমার রাজনৈতিক শিক্ষা হল সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সংগঠনের মধ্যেই আলোচনা করতে হয়। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনা করব না।’’
গত শুক্রবার কুণালের যে সাক্ষাৎকার ঘিরে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল, সেখানকার একটি মন্তব্যের সঙ্গেও সোমবারের মন্তব্যের যোগসূত্র দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। কুণাল সে দিন বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে হারলেন। তার কোনও পর্যালোচনা হয়েছে কি?’’ তৃণমূলের কারও কারও ব্যাখ্যা, নন্দীগ্রামে মমতার হয়ে ভোট করাতে যে দু’জন পড়ে থেকে কাজ করেছিলেন, তাঁদের একজন পূর্ণেন্দু এবং অন্য জন দোলা। সোমবার কুণাল যা বলেছেন সেই তোপও তাঁদের উদ্দেশে বলেই মনে করছেন অনেকেই। কুণাল নিজে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘‘আমি যা বলেছি তা যাঁরা বোঝার বুঝে গিয়েছেন। নতুন করে আর কোনও ব্যাখ্যা অন্তত এই মুহূর্তে আমি আর দেব না।’’