টাকার পতন ও জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বৈঠক মোদীর। —ফাইল ছবি
টাকার পতন এবং বেড়ে চলা বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি নিয়ে আতঙ্কে নরেন্দ্র মোদী সরকার অনাবশ্যকীয় পণ্যের আমদানিতে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিল। তার আগে ডলারের আমদানি বাড়াতে আশু পদক্ষেপ হিসেবে পাঁচ দফা সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়েছে। যার জেরে দেশে অন্তত ৮০০ থেকে ১০০০ কোটি ডলার ঢুকবে বলে অর্থ মন্ত্রকের দাবি।
প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর বাসভবনে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল, প্রধানমন্ত্রী দফতর ও অর্থ মন্ত্রকের দফতরের কর্তাদের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন। পেট্রল-ডিজেলের দাম মোদী সরকারের পক্ষে ভোটের আগে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। সেই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি ২.৫ শতাংশে পৌঁছে যাওয়াও মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। বৈঠকের পর পাঁচ দফা সিদ্ধান্ত হিসেবে জেটলি ঘোষণা করেন, এ দেশের ব্যাঙ্কগুলির ‘মসালা বন্ড’ বা বিদেশে টাকার অঙ্কে ছাড়া বন্ডে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া হবে। চলতি অর্থ বছরে মসালা বন্ডে কর ছাড দেওয়া হবে। পরিকাঠামো ঋণে ঝুঁকি কমাতে ডলারে লগ্নির মতো যে সব বাধ্যতামূলক শর্ত ছিল, তার পর্যালোচনা হবে। উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি ৫ কোটি ডলার পর্যন্ত এক বছরের ঋণ নিতে পারবে। কর্পোরেট বন্ডে বিদেশি লগ্নি বাড়াতেও কিছু শর্ত শিথিল হবে। জেটলির যুক্তি, বিশ্ব বাজারে বাণিজ্য-যুদ্ধ ভারতকের মতো অর্থনীতিকে ধাক্কা দেবেই। তবে মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। কালও প্রধানমন্ত্রী আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ-সহ অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
অর্থ বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ বলেন, কোন কোন পণ্যে আমদানি কমানো যায় তা চিহ্নিত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সোনার আমদানি কমাতে কিছু পদক্ষেপ হতে পারে। তবে যেখানে ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার ৪০ হাজার কোটি ডলার, সেখানে বাড়তি ৮০০-১০০০ কোটি ডলার এলেই টাকার দাম ডলারের তুলনায় বাড়বে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অর্থনীতিবিদদের যুক্তি, উল্টে আজকের পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট যে সরকার আতঙ্কিত। ফলে মুদ্রার লেনদেনের বাজারে তার উল্টো প্রভাব পড়তে পারে।