পোর্ট ব্লেয়ারের বিমানবন্দরের নতুন ভবন উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
বিরোধী বৈঠক নিয়ে আসরে নামতে হল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। বেঙ্গালুরুতে বিজেপি-বিরোধী দলগুলির দ্বিতীয় বৈঠক শুরু হওয়ার আগে কড়া ভাষায় সেই বৈঠককে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধী বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতা-নেত্রীদের ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীদের কাছে দেশ নয়, আসলে পরিবারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
পোর্ট ব্লেয়ারের বীর সাভারকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন একটি ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার সকালে ভার্চুয়ালি হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভার্চুয়াল মাধ্যমেই ওই ভবনের উদ্বোধন করেন। সেই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে একহাত নিয়েছেন বেঙ্গালুরুতে জড়ো হওয়া বিরোধীদের। তিনি বলেছেন, ‘‘ওঁরা পরিবারকেই অগ্রাধিকার দেন। দেশকে নয়। দুর্নীতি ওঁদের অনুপ্রেরণা। যে যত বড় দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, বৈঠকে তাঁর আসন হবে তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’
এর আগে সোমবারই বৈঠক নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তিনি বলেছিলেন, “বিরোধীদের এই বৈঠক দুর্নীতিগ্রস্তদের সমাবেশ। কোনও স্থিরতা নেই তাদের।” তাঁর দাবি, বিরোধীদের কোনও মুখ নেই। নীতিও নেই। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিরোধীদের বৈঠক নিয়ে মোদীর মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। এক বিরোধী নেতার প্রশ্ন, ‘‘তা হলে মোদী নিজেও কি আর বিরোধী বৈঠককে উপেক্ষা করতে পারছেন না?’’
মঙ্গলবার বিরোধী বৈঠককে কটাক্ষ করে মোদী আরও বলেন, ‘‘এ তো কট্টর ভ্রষ্টাচারীদের সম্মেলন হচ্ছে।’’ এর পরেই মোদী যোগ করেন, ‘‘বিরোধীদের মন্ত্র হল, অফ দ্য ফ্যামিলি, বাই দ্য ফ্যামিলি এবং ফর দ্য ফ্যামিলি।’’ দেশকে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির ভুক্তভোগী বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি জুড়ে দিয়েছেন, ‘‘গত ৯ বছরে আমরা পুরনো সরকারের ভুলগুলি শুধরে দেশের মানুষকে নতুন সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিয়েছি। দেশে উন্নয়নের মডেল তৈরি হয়েছে। এটা ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-এর মডেল।’’
মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন বিজেপি-বিরোধী ২৬টি দলের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে যোগ দিয়ে সোমবারই বেঙ্গালুরু পৌঁছে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গী হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২৩ জুন পটনায় বিরোধীদের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন মমতা। এই বৈঠকগুলিতে মূলত বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল নির্ধারণ করা হবে। বেঙ্গালুরুতে ১৭-১৮ জুলাই দ্বিতীয় সম্মেলনের দিনই এনডিএ শরিকদের নিয়ে পাল্টা বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। উদ্দেশ্য, লোকসভা ভোটের আগে এনডিএ-র সম্প্রসারণ। মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডারা সেই বৈঠকে থাকছেন। সঙ্গে থাকছেন এনডিএ-র ৩৮টি দলের প্রতিনিধিরা।