প্রতীকী ছবি।
আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে। বাজারে চাহিদা কমায় সমস্যায় শিল্প। জিএসটি সংগ্রহও প্রত্যাশিত নয়। এই অবস্থায় আগামী পাঁচ বছরে দেশকে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তুলতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা ঢালার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও বিরোধীদের প্রশ্ন, এই বিপুল টাকা আসবে কোথা থেকে?
৭৩তম স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশে বিশ্বমানের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রাস্তা, রেল, বন্দর, বিমানবন্দর, হাসপাতাল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়তে এই টাকা খরচ করা হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা দেশকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছি। অনেকে বলছেন কাজটা কঠিন। কিন্তু কঠিন কাজ করতে না পারলে কী ভাবে অগ্রগতি সম্ভব?’’
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৫.৮ শতাংশে নেমেছে। পাশাপাশি বেড়েছে কর আদায় বৃদ্ধি এবং চলতি খাতে ঘাটতি। এই অবস্থায় পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ঢালার জন্য এত টাকা কী ভাবে আসবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।
বস্তুত, কয়েক মাস আগে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছিলেন, ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা শুনতে ভাল। বৃদ্ধি টানা ৮% হলে অঙ্কের হিসেবেও দেশের অর্থনীতির বহর ওই জায়গায় পৌঁছনোর কথা। কিন্তু বৃদ্ধির হারই যে ভাবে ধাক্কা খেয়েছে এবং দেশ ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতি যে রকম আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে, তাতে কি ওই লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া সম্ভব?
এই প্রেক্ষিতে অনেকেরই বক্তব্য, শুধু সরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে আদৌ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিশেষত যেখানে গাড়ি, আবাসন, ভোগ্যপণ্য-সহ বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্র ধাক্কা খাওয়ায় কমেছে কর আদায় বৃদ্ধির হার। অন্য দিকে, বাজারে চাহিদার অভাবের কারণে বেসরকারি সংস্থাগুলিও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে হাত গুটিয়ে রেখেছে। তাই তাদের তরফেও পরিকাঠামোয় বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় রয়েছে।