মথুরার শ্রীকৃষ্ণ মন্দির এবং শাহি ইদগাহ মসজিদ। — ফাইল চিত্র।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের পরে এ বার মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার’ দাবি শীর্ষ আদালতে। হিন্দুত্ববাদীদের তরফে মথুরা আদালতে সোমবার আবেদন জানানো হয়েছে, জ্ঞানবাপী মসজিদের মতো শাহি ইদগাহেও রয়েছে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’। তাই সেই নিদর্শনগুলি খুঁজে বার করার জন্য জ্ঞানবাপীর মতোই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মুক্তি নির্মাণ ট্রাস্টের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে শীর্ষ আদালতে।
উত্তরপ্রদেশের মন্দিরনগরীর প্রাচীন ইদগাহটি সরানোর দাবিতে হিন্দুত্ববাদীদের দায়ের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে গত জুলাই মাসে ওই মামলার নথিপত্র ইলাহাবাদ হাই কোর্টের কাছে তলব করেছি সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি এসকে কল এবং বিচারপতি শুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে এ সংক্রান্ত নথিপত্র চেয়েছিলেন। সোমবার শুনানিপর্বে হিন্দুত্ববাদীদের তরফে বলা হয়, ‘ওই বিতর্কিত এলাকার ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে নিঃসংশয় হওয়ার জন্য বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা প্রয়োজন। মামলার প্রকৃতি খতিয়ে দেখে বিষয়টি শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন থাকবে কি না, তা বিবেচনা করা হতে পারে বলে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে।
মথুরার প্রাচীন কাটরা স্তূপ (যা কাটরা কেশবদাস নামে পরিচিত) এলাকায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ইদগাহের ওই জমিতে কৃষ্ণের জন্মস্থানে ছিল প্রাচীন কেশবদাস মন্দির। কাশীর ‘আসল বিশ্বনাথ মন্দিরের’ মতোই মথুরার মন্দিরটিও ধ্বংস করেছিলেন মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব। অভিযোগ, অওরঙ্গজেবের নির্দেশে ১৬৬৯ থেকে ১৬৭০ সালে তৈরি করা হয়েছিল মসজিদটি। কাটরা কেশবদাস মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জায়গা দখল করে শাহি ইদগাহ মসজিদ গড়া হয়েছিল বলে অভিযোগ হিন্দুত্ববাদীদের।
মথুরা শাহি ইদগাহে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার’ আবেদনের মামলার রায় ঘোষণার আগেই সেখানে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’ নষ্ট করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে পুরো চত্বরটি সিল করার দাবিতে এর পর নতুন করে হিন্দুত্ববাদীদের তরফে পৃথক একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে মথুরা আদালতে। প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর এএসআইএর অধীনে সেখানে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল মথুরা আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশকে ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইনে চ্যালেঞ্জ জানানো হয় ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। ১৯৯১ সালের ওই আইনে বলা হয়েছিল, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের পর দেশে যে ধর্মীয় স্থান যে অবস্থায় ছিল, সে ভাবেই তা থাকবে। এর পর মামলাটি গিয়েছে শীর্ষ আদালতে।