জনস্বার্থ মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টে। — প্রতীকী চিত্র।
কর্নাটকে ‘মধুচক্র’ বিতর্কের জল এ বার গড়াল সুপ্রিম কোর্টে। গত সপ্তাহেই কর্নাটকের মন্ত্রী কেএন রাজন্ন দাবি করেন, তাঁকে মধুচক্রে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে। মন্ত্রীর দাবি, তিনি একাই নন, বিধায়ক, রাজনীতিক, বিচারক-সহ ৪৮ জনকে এই মধুচক্রের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। এ বার ওই অভিযোগ নিয়ে শীর্ষ আদালতে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। বিষয়টি নিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, বিষয়টি মঙ্গলবারের শুনানির তালিকায় রাখা হবে।
কর্নাটকের মন্ত্রীর ওই দাবির প্রেক্ষিতে আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, মামলাকারীর বক্তব্য, “যে কোনও গণতন্ত্রের ভিত্তি হল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। বিচারকেরা কোনও ভয় বা বাইরের প্রভাব ছাড়া আইনের শাসন বজায় রাখবেন, এটাই সবাই আশা করেন। তবে যদি বিচারকদের মধুচক্রে ফাঁসানোর অভিযোগের কোনও সত্যতা থাকে, তবে সেটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য উদ্বেগজনক। এর ফলে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে নিয়ে শঙ্কা তৈরি হতে পারে।” মামলাকারীর আশঙ্কা, বিচারকেরা যদি এই ধরনের কোনও ফাঁদের শিকার হন, তবে রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার সঙ্গে গুরুতর আপস করা হতে পারে! ন্যায়বিচারের পরিবর্তে, যাঁরা হুমকি দিচ্ছেন, তাঁদের পক্ষে রায় যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় বলেও মনে করছেন মামলাকারী। এই অবস্থায় আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
কর্নাটকের এই ‘মধুচক্র বিতর্কের’ সূত্রপাত হয় গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন কর্নাটকের বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীন এই অভিযোগ তোলেন রাজন্ন। তিনি কংগ্রেসশাসিত কর্নাটকের সমবায়মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। মন্ত্রীর দাবি, একটি দুষ্কৃতীদল তাঁকে মধুচক্রে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। রাজন্ন জানান, তিনি ছাড়াও আরও ৪৭ জনকে মধুচক্রের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। এটি শুধু একটি নির্দিষ্ট দলের রাজনীতিকদের সঙ্গে হয়নি। বিভিন্ন দলের রাজনীতিকদের ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে বলে দাবি তাঁর। এমনকি এই ৪৮ জনের তালিকায় কয়েক জন বিচারকও রয়েছেন বলে দাবি কর্নাটকের সমবায়মন্ত্রীর। তা নিয়ে গত সপ্তাহে তুমুল হট্টগোল হয়েছে কর্নাটক বিধানসভায়।