Cash Recovery from Judge House

নগদকাণ্ড: বিচারপতি বর্মাকে বিচারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিল দিল্লি হাই কোর্ট, ভবিষ্যৎ কী

বিচারপতি বর্মার বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর দিল্লি হাই কোর্টে তাঁর বেঞ্চ বসেনি। এ বার নির্দেশিকা জারি করে তাঁকে বিচারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫ ১২:২৮
Share:
একটি অনুষ্ঠানে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতির যশবন্ত বর্মা।

একটি অনুষ্ঠানে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতির যশবন্ত বর্মা। —ফাইল চিত্র।

দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে বিচারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। সোমবার এই সংক্রান্ত বিবৃতি জারি করেছে দিল্লির উচ্চ আদালত। বলা হয়েছে, অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে নগদ উদ্ধারকাণ্ডে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিকে উপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে তিনি মনে করেন, আরও গভীরে গিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

Advertisement

বিচারপতি বর্মার বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর দিল্লি হাই কোর্টে তাঁর বেঞ্চ বসেনি। আদালত জানিয়েছিল, ওই বেঞ্চের বিচারপতি ছুটিতে আছেন। এ বার বিচারপতিকে নির্দেশিকা জারি করে বিচারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। বিষয়টি নিয়ে সংসদেও শোরগোল হয়েছে। এই বিষয়ে সবিস্তার আলোচনা চেয়ে সোমবার সংসদে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চেয়েছে কংগ্রেস। বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে এই মর্মে নোটিস জমা দিয়েছেন দলের দুই সাংসদ মনিকম টেগোর এবং রেণুকা চৌধরি। সোমবারই রাজ্যসভার দলনেতা জেপি নড্ডা এবং বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়।

গত ১৪ মার্চ রাত ১১টা ৩৫ মিনিট নাগাদ দিল্লিতে বিচারপতি বর্মার সরকারি বাংলোয় আচমকা আগুন লেগে গিয়েছিল। সে সময়ে বিচারপতি এবং তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যেরা দমকল ডাকেন। সেই দমকলবাহিনী আগুন নেভাতে গিয়ে বিচারপতির বাড়িতে প্রচুর পরিমাণে নগদ টাকা দেখতে পায় বলে দাবি। অভিযোগ, ওই টাকা হিসাব-বহির্ভূত। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিচারপতি বর্মাকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। পরে তারা বিবৃতি দিয়ে জানায়, বদলির সিদ্ধান্তের সঙ্গে নগদকাণ্ডের কোনও যোগ নেই। বিচারপতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি ওঠে। সূত্রের খবর, কলেজিয়ামের সদস্যেরাই জানান, বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বিচারপতি বর্মাকে সরানো প্রয়োজন। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রয়োজন।

Advertisement

এর পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না নগদকাণ্ডে দিল্লি হাই কোর্টের রিপোর্ট তলব করেন। বিস্তারিত রিপোর্ট শীর্ষ আদালতে জমা দেন প্রধান বিচারপতি উপাধ্যায়। তাতে অভিযুক্ত বিচারপতির বক্তব্যও ছিল। সম্পূর্ণ রিপোর্টটি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। বিচারপতি বর্মা দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। ঘটনার দিন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ভোপালে ছিলেন। যে ঘর থেকে টাকা পাওয়া গিয়েছে, তা বাংলোর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। সেখানে বাইরের লোকের যাতায়াত রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি খন্না এই সংক্রান্ত তদন্তের জন্য যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন, তাতে রয়েছেন পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি শীল নাগু, হিমাচল প্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি জিএস সন্ধাওয়ালিয়া এবং কর্নাটক হাই কোর্টের বিচারপতি অনু শিবরামন। ইতিমধ্যে আইনমহল থেকে বিচারপতি বর্মার পদত্যাগের দাবি উঠতে শুরু করেছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটিকে প্রথমে দায়িত্ব দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই রিপোর্ট দেখে দেশের প্রধান বিচারপতি যদি মনে করেন, তিনি অভিযুক্তকে পদত্যাগের নির্দেশ দিতে পারেন। এর পরেও ওই বিচারপতি যদি পদত্যাগে রাজি না-হন, তবে সংসদের মাধ্যমে তাঁর অপসারণের জন্য প্রধান বিচারপতি সরকারকে চিঠি লিখতে পারেন। ভারতীয় সংবিধানের ১২৪(৪) ধারা অনুযায়ী, সংসদের মাধ্যমে হাই কোর্টের বিচারপতিকে অপসারণ করা যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement