বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের কাছে তিনি আর কোনও আশা করেন না বলে মন্তব্য করে সম্প্রতি বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। এ বার একটি মামলার শুনানিতে সেই সর্বোচ্চ আদালতেই তিনি মন্তব্য করলেন যে, প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা ধীরে ধীরে কমে আসছে।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ে তাঁর ২৫ বছর বয়স হয়নি, এই যুক্তিতে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় এসপি নেতা আজ়ম খানের ছেলে আবদুল্লা আজ়ম খানের নির্বাচন খারিজ করেছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। তারই আপিল মামলা চলছে বিচারপতি অজয় রাস্তোগি এবং বিচারপতি বি ভি নাগরত্নের বেঞ্চে। আজ তারই শুনানিতে আবদুল্লার আইনজীবী সিব্বল বিচারপতিদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা যে চেয়ারে আসীন, তার প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। এ হল বার (আইনজীবী) এবং বেঞ্চ (বিচারক/বিচারপতি)-এর এমন এক বিবাহ, যাকে ভাঙা যায় না। কিন্তু কখনও কখনও যখন বুঝতে পারি, এ প্রান্তে কী হচ্ছে আর ও প্রান্তে কী হচ্ছে— তখন আমার মতো এই আদালতে জীবন সঁপে দেওয়া এক জন মানুষ বিচলিত হয়ে পড়ে।’’
বার এবং বেঞ্চকে রথের দুই চাকার সঙ্গে তুলনা করেন বিচারপতি রাস্তোগি। কিন্তু তিনি বলেন, ‘‘বাস্তব সত্যিটা হল, রথ যখন কোথাও রয়েছে, তখন তার এক চাকা কোথায় যাচ্ছে আর অন্য চাকা কোথায় যাচ্ছে, তা ঈশ্বরই জানেন। আমরা এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত। তা আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। বার এবং আমাদের নিজেদেরও আত্মনিরীক্ষণ করে দেখা দরকার, এমন একটা দেশে আমরা কী ভাবে টিকে থাকব, যেখানে মানুষের বিশ্বাস মুছে যাবে না। বরং তা ফিরে আসবে।’’
এরই উত্তরে সিব্বল জানান, বার এবং বেঞ্চ, দু’তরফই নিয়ম মেনে চললে এই বিশ্বাস ফিরে আসা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি এ প্রান্তে এবং ও প্রান্তে একই নিয়ম মেনে চলি, একমাত্র তা হলেই এমনটা হতে পারে— যখন আমি আদালতে আসব এবং বিশ্বাস করব, যা খুশি হোক, রায় আমার বিরুদ্ধে গেলেও কিছু যায়-আসে না। প্রথমত, আমার কথা শোনা হয়েছে এবং ভয় বা পক্ষপাত দ্বারা চালিত না হয়ে আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। এই তিনটি জিনিস ঘটলে তবেই বিশ্বাস ফিরবে। হার-জিত নয়, প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমাদের বিশ্বাসটাই আসল কথা, যা ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে।’’ বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, জয়ী পক্ষের চেয়ে পরাজিত পক্ষের অনুভূতি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পরাজিত পক্ষও যেন সন্তুষ্ট হয়ে ফিরেযেতে পারেন।